কিছুদিন আগে ডিম আমদানির খবরে কমে যায় দাম। তবে আমদানি না হওয়ায় আবারও বাড়তে শুরু করেছে ডিমের বাজার। পাইকারি পর্যায়ে বর্তমানে প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকায়। এছাড়া খুচরা প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩ টাকা ৫০ পয়সা। অথচ গত মাসের শুরুর দিকে খুচরা বাজারে প্রতি পিস ডিম ১২ টাকায় বিক্রির জন্য দাম নির্ধারণ করে বাণিজ্যমন্ত্রণালয়। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার ভারত থেকে কয়েক দফায় ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। এর ফলে ছোট ও মাঝারি খামারিরা লোকসানের আশঙ্কায় লেয়ার মুরগি বিক্রি করে দিয়েছেন। এছাড়া বর্তমানে সবজির দাম বাড়তি থাকায় ডিমের ওপর চাপ বেড়েছে। একদিকে চাহিদা বেড়েছে, আবার অপরদিকে রয়েছে সরবরাহ সংকট, তাই ডিমের বাজার বাড়তি রয়েছে।
গতকাল নগরীর পাহাড়তলী ডিমের আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে একশত ডিম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকায়। ডিমের বৃহৎ আড়ত টাঙ্গাইল থেকে সেই ডিম কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ১৭০ টাকায়। অপরদিকে কাজীর দেউড়ির খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫–১৬০ টাকায়।
কাজীর দেউড়ির বাজারে কথা হয় ক্রেতা মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয়ার পরেও আমরা সেই দামে কিনতে পারছি না। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে ক্রেতারা অসহায় হয়ে পড়েছে। প্রশাসন অভিযান চালিয়ে জরিমানা করে, তারপরেও দাম নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। দাম বাড়ার পর থেকে বাধ্য হয়ে এক জোড়ার বেশি ডিম কিনি না।
দিনমজুর হোসেন বলেন, সবজির দামের কারণে ডিমই একমাত্র ভরসা ছিল। আগে একটি দুই ভাগ করে খেতাম, এখন চার ভাগ করে খেতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস শুক্কুর দৈনিক আজাদীকে বলেন, ডিম আমদানি হচ্ছে এই খবরের পর থেকে অনেক খামারি খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। কারণ এখন ডিম উৎপাদনের খরচ অনেক বেশি। বিশেষ করে মুরগির খাবারের দাম বাড়তি। অন্যদিকে ডিম আমদানি হয়নি, তাই বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহের সংকট দেখা দিয়েছে।
এদিকে আগামীকাল ১৩ অক্টোবর বিশ্ব ডিম দিবস। অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশেও পালিত হবে দিবসটি। প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠনে ১৯৯৬ সাল থেকে এ দিনটি পালিত হয়ে আসছে। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য এ দিনটির গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ বাংলাদেশের মানুষ বছরে ডিম খায় গড়ে মাত্র ৪৫–৫০টি। অথচ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মতে সুস্থ থাকার জন্য জনপ্রতি ১০৪টি ডিম খাওয়া প্রয়োজন। মেধাবী এবং সুস্থ সবল জাতি গঠনে ডিমের বিকল্প নেই। ডিমের মধ্যে সরাসরি আমিষ রয়েছে। সাত ধরনের ভিটামিন রয়েছে। ডিমে ম্যাগনেশিয়াম, মিনারেল, আয়রন, ফসফরাস, জিংক রয়েছে। ডিম উপকারি কোলেস্টেরল বাড়ায়, অপকারি কোলেস্টেরল কমায়। ডিমে কৌলিন আছে যা ব্রেনসেল গঠনে সহযোগিতা করে। মাংশপেশী গঠনেও ভূমিকা রাখে। ডিম এমন উপকারি একটি খাবার যা নিয়মিত খেলে চোখে ছানি পড়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।