ফেনীতে বাস-ট্রেন সংঘর্ষে তিন বাসযাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার ভোর সোয়া ৬টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলসড়কের ফতেহ রেলক্রসিং এলাকায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৩ জন। আহতদের বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
পুলিশ ও ফায়ার সাভির্স সূত্র জানায়, ভোরে চট্টগ্রাম মেইলের সঙ্গে চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা এনআর শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে দুইজন নিহত হন। হাসপাতালে নেয়ার পর আরও একজন মারা যান। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুইজনকে ঢাকায় ও একজনকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।
বাসে থাকা এক যাত্রী জানান, চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসে এনআর শ্যামলী পরিবহনের বাস কুমিল্লার নুর জাহান হোটেলে যাত্রা বিরতির পর আবার ছাড়ে। ভোরে গভীর ঘুমে থাকা অবস্থায় হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। এরপর দেখি বাসটি উল্টে আছে। ঘুমে থাকায় বাসের ড্রাইভারের কোনো গাফিলতি আছে কি-না তা জানতে পারিনি।
এদিকে, বাস-ট্রেন দুর্ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে ফতেহপুর রেল ক্রসিংয়ে দায়িত্বরত গেটম্যান আবুল কালামের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। অবশ্য গেটম্যানকে নিয়ে পাওয়া গেছে বিপরীতমুখী বক্তব্য। গেটম্যান আবুল কালাম বাসটিকে ইশারা দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বাসচালক সিগন্যাল না মেনে ভেতরে ঢুকে পড়লে ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে বলে দাবি করেছেন ফেনী রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী প্রকৌশলী রিটন চাকমা।
ফেনী জিআরপি পুলিশের ইনচার্জ উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে রেল ক্রসিংয়ে গেটম্যানকে পাইনি। হয়তো তিনি দুর্ঘটনার সময় ঘুমিয়ে ছিলেন। পরে পালিয়ে যান।
অন্যদিকে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বলে জানিয়েছেন ফেনী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মাহবুবুর রহমান। কমিটির সদস্যরা হলেন, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ডিএন-১ আব্দুল হানিফ মুকুল, ডিএসটিই জাহেদ আরেফিন পাটোয়ারী তন্ময়, ডিটিও স্নেহাশীষ দাশ গুপ্ত, পাহাড়তলীর ডিএমও তন্ময় দত্ত ও ডিএনএ (লোকো) ওয়াহিদুর রহমান। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
মাহবুবুর রহমান জানান, দুর্ঘটনার কারণে একটি লাইন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে অপর লাইন দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে।