ফুলের দোকানে প্রাণের উচ্ছ্বাস

তবে বিক্রি কম বলছেন ব্যবসায়ীরা

জাহেদুল কবির | বুধবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৬:২২ পূর্বাহ্ণ

আজ পহেলা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্ত এলেই মনে পড়ে যায় রবীন্দ্রনাথের সেই পরিচিত গান ‘আহা আজি এ বসন্তে, এত ফুল ফোটে/ এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়’। প্রকৃতিতে আজ একদিকে ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। অন্যদিকে আজ আবার ভালোবাসা দিবস। এদিন তরুণতরুণীরা বাসন্তী রঙের পাঞ্জাবিশাড়ি পরে সামিল হয় বসন্ত উৎসবে। তরুণীরা মাথায় রিং ও খোঁপায় গাঁদা ফুল গুঁজে দিনভর খুনসুটিতে মেতে থাকেন। অপরদিকে ভালোবাসা দিবসে প্রেমিকপ্রেমিকা ও দম্পতিরা লাল শাড়ি, পাঞ্জাবি ও সেলোয়ারকামিজ পরে দিনটি উপভোগ করে থাকেন। তবে ভালোবাসা দিবসের প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে ফুল। ফলে দিবস দুটিকে কেন্দ্র করে নগরীর ফুলের দোকানগুলো ফুলে ফুলে ভরে গেছে।

ফুল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বসন্ত উৎসবে সাধারণত গাঁদা ফুলের চাহিদাই বেশি থাকে। তবে ফুলের প্রধান বিক্রি হয় ভালোবাসা দিবসে। স্বাভাবিকভাবে ভালোবাসার প্রতীক ‘লাল গোলাপ’ এর চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। তবে এ বছর বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসের একদিন পরেও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা। তাই যে পরিবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী আছে, সে পরিবারের সদস্যরা উৎসবে সামিল হচ্ছেন না, তাই ফুল বিক্রির অবস্থাও মন্দা দাবি ব্যবসায়ীদের।

জানা গেছে, ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে তরুণতরুণীরা চন্দ্রমল্লিকা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, লিলি ফুলই বেশি কিনছে। বসন্ত উৎসবের জন্য তরুণীরা গাঁদা ফুলের পাশাপাশি মাথার রিঙের অর্ডার দিয়েছে বেশি।

গতকাল নগরীর কয়েকটি ফুলের বাজারে ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে বাহারি রঙের ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। দোকানের কর্মচারীরা এসব ফুলে পানি ছিটিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কেউ আবার ফুলের গহনা, মাথার রিং ও খোঁপায় পরার নানান ধরনের ফুলের লহর তৈরি করছেন।

ফুলের দোকানে আসা তরুণীরা জানান, ফুল এখন আর সৌখিনতার বস্তু নয়। ফুলের আদানপ্রদানের মাধ্যমে পারস্পরিক বিশ্বাস, প্রতিশ্রুতি, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এছাড়া নিজেকে সাজাতে ফুলের জুড়ি নেই। প্রেমিক যুগলের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি উপহার হলো ফুল। অন্যদিকে বসন্তে নানা বয়সী মেয়ে ফুলের রিং মাথায় পরে ঘুরে বেড়ায়। এছাড়া কানে দুল, গলায় মালা ও হাতে ফুলের বাহারি অলঙ্কার পরার পাশাপাশি চুলের এক পাশে তাজা ফুল ক্লিপ দিয়ে সাঁটিয়ে থাকেন তরুণীরা।

ফুল বিক্রেতারা জানান, বসন্ত উৎসব ও ভালোবাসা দিবসে গাঁদা এবং গোলাপ ফুলের প্রচুর চাহিদা থাকে। গোলাপের মধ্যে রয়েছে লাল, সাদা, অরেঞ্জ, হলুদ রঙের গোলাপ। ভালোবাসা দিবসে লাল গোলাপের চাহিদা একটু বেশি থাকে। প্রতিটি দেশি লাল গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে টাকা দরে। তবে বিভিন্ন রঙের চীনা গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। প্রতিটি চীনা লিলি ৪৫০ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা স্টিক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, জারবেরা প্রতিটি ২০ থেকে ৩০ টাকা, প্রতিটি দেশি গ্লাডিওলাস ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি বান্ডেল জিপসি ফুল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতিটি অর্কিড ১৫০ টাকা, রজনীগন্ধা স্টিক প্রতিটি ২০ টাকা, ফুলের লহর ২৫৩০ টাকা, মাথার রিং ৩০০৭০০ টাকা, গাঁজরা ফুল ১৫০ টাকা এবং বিভিন্ন ফুলের সমন্বয়ে তৈরি ফুলের ঝুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়।

নগরীর ২ নম্বর গেট থেকে আসা তরুণী উম্মে হাবিবা বলেন, বান্ধবীদের সাথে ফুলের দোকানে এসেছে মাথার রিঙ অর্ডার দেয়ার জন্য। বসন্ত উৎসবে সারাদিন বাসন্তী রঙের শাড়ি এবং নানা ধরনের ফুলের তৈরি অলঙ্কার পরে ঘুরবো। সারা বছর এদিনের অপেক্ষায় থাকি।

চট্টগ্রাম ফুল ব্যবসায়ী ও চাষি বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. কুতুব উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রতি বছরের মত এবারও ব্যবসায়ীরা প্রচুর পরিমাণ ফুল নিয়ে এসেছেন। তবে ফুলের বাজারে বেচাবিক্রি মন্দা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশীর্ষ ডিলারদের সম্মাননা দিল জিপিএইচ ইস্পাত
পরবর্তী নিবন্ধনিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন পূরণ হলো না আরমানের