একদিকে নির্বিষ বোলিং। অন্যদিকে একের পর এক ক্যাচ মিসের মহড়া। এসবের মাশুলটা কেমন হতে পারে সেটা বেশ ভালোই টের পেয়েছে বাংলাদেশ দল। দিনের শুরু থেকে ক্যাচ ফেলার প্রতিযোগিতায় নামা বাংলাদেশ দল মাঠে মোটেও প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে পারেনি। প্রথম টেস্টে হেরে পিছিয়ে থাকা একটি দলকে দ্বিতীয় টেস্টে জেতার জন্য কেমন মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামা দরকার সেটা দেখা যায়নি বাংলাদেশের খেলায়। ফলে প্রথম দিনটা বলা যায় নিজেদের করে নিয়েছে শ্রীলংকা। কারণ চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন শেষে সফরকারীরা তাদের প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ করেছে ৪ উইকেটে ৩১৪ রান। ফলে আজ যে লংকানরা তাদের ইনিংসটাকে পাহাড়ে নিয়ে যাবে সেটা বলাই যায়। শ্রীলঙ্কার প্রথম তিন ব্যাটসম্যানই তুলে নিয়েছে হাফ সেঞ্চুরি। দুজন এগিয়ে গিয়েছিলেন সেঞ্চুরির কাছে। তবে তিন অঙ্কের দেখা পাননি কেউই। ৯৩ রানে আউট হয়েছেন কুসল মেন্ডিস। ৮৬ রানে ফিরেছেন দিমুথ করুনারত্নে। আর ওপেনার নিশান মাদুশকা রান আউট হয়ে ফিরেন ৫৭ রানে। প্রথম দুজন জীবন পেয়েছেন একেবারে ইনিংসের শুরুতে।
টসে জিতে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেননি লংকান অধিনায়ক। বাংলাদেশের ধারহীন বোলিংয়ের পাশাপাশি ভুগেছে ফিল্ডিংয়ের ব্যর্থতায়। ৯ রানে হাসান মাহমুদের বলে স্লিপে মাদুশকার সহজ ক্যাচ ছাড়েন মাহমুদুল হাসান জয়। করুনারাত্নেকে ১৮ রানে রান আউট করার সুযোগ হাতছাড়া করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। করুনারাত্নে একটু পর সুযোগ দিয়েছিলেন আরেকটি। তবে সীমানায় কঠিন সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি সাকিব। উল্টো সেটি ছক্কা হয়ে যায়। ফলে লঙ্কান দুই ওপেনার নিশান মাদুশকা ও করুনারত্নে প্রথম সেশনে তোলেন ৮৮ রান। তবে বাংলাদেশের উইকেট নেওয়ার সুযোগ ছিল তিন দফায়। যেগুলো কাজে লাগাতে পারেনি জয়, মিরাজ ও সাকিব। লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ওভারে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। দ্বিতীয় রান নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হন নিশান। জুটি থামে ৯৬ রানে। ৫৭ রান করে ফিরেন এই ওপেনার।
পরের জুটিতে করুনারত্নে ও কুসাল মেন্ডিস যোগ করেন ১১৪ রান। চা বিরতির একটু আগে বিদায় নেন করুনারত্নে। হাসান মাহমুদের নতুন স্পেলের প্রথম বল ড্রাইভ করতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে আনেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। ফিরেছেন ১২৯ বলে ৮৬ রান করে। তার ইনিংসে ৮টি চার এবং একটি ছক্কা। করুনারত্নের মতো একটুর জন্য শতরান পাননি কুসলও। সাকিবের টার্ন ও বাউন্সে স্লিপে মিরাজের হাতে ধরা পড়েন তিনি দশম সেঞ্চুরি থেকে ৭ রান দূরে থাকতে। টেস্ট ক্যারিয়ারে এই প্রথমবার নব্বইয়ে আটকা পড়লেন তিনি। ১৫০ বলে ৯৩ রানে থামেন তিনি। পরের জুটিকে বেশি লম্বা হতে দেননি হাসান মাহমুদ। দ্বিতীয় নতুন বলে তিনি ফেরান ম্যাথিউসকে। এই ম্যাথিউস ১০ রানে মিরাজের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েও রক্ষা পেয়েছিলেন। যদিও সুযোগটি তিনি কাজে লাগাতে পারেননি। ২৩ রান করে স্লিপে ধরা পড়েন মিরাজের হাতে। দিনেশ চান্দিমাল ও ধনাঞ্জায়া ডি সিলভা দিনের বাকি সময় কাটিয়ে দেন অনায়াসেই। দুটি করে চার–ছক্কায় ৩৪ রানে দিন শেষ করেন চান্দিমাল। ধনাঞ্জায়া অপরাজিত রয়েছেন ১৫ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ নিয়েছেন ২ উইকেট।