ফিলিস্তিনি মুসলমানসহ বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান

শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের সমাপনী

| বৃহস্পতিবার , ২৫ জুলাই, ২০২৪ at ১:৫৬ অপরাহ্ণ

জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে ১০ দিনব্যাপী ৩৯ তম আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তিসমৃদ্ধি কামনায় আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়ে গত ১৭ জুলাই শেষ হয়েছে। স্বাধীন সার্বভৗম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়া এবং ফিলিস্তিনের গাঁজার মুসলমানসহ বিশ্বের নিপীড়িত নিগৃহীত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয় এই মাহফিলে। শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদ ১০ দিনব্যাপী এই মাহফিলের আয়োজন করে।

বিদেশি আলোচক ছিলেন বড়পীর শেখ সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানি (রা.) এর বংশধর শাহ্‌ সূফি আল্লামা সৈয়দ আফিফ আব্দুল কাদের মনসুর আলজিলানি আলবাগদাদী। তিনি বলেন, প্রিয় নবী রাহমাতুল্লিল আলামিন () বলেছেন, হযরত ইমাম হাসান (রা.) ও হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) জান্নাতের দুুটি ফুল। যাঁরা তাঁদের ভালোবাসবে তাঁরা যেন আমাকেই ভালোবাসল। আর যারা আহলে বায়তে রাসূলের (.) প্রতি দুশমনি রাখবে, প্রকারান্তরে তারা যেন আমার সঙ্গেই শত্রুতা পোষণ করল। আহলে বায়তে রাসূলের (.) মর্যাদা ও সম্মান বুলন্দ করেছেন স্বয়ং আল্লাহ পাক এবং প্রিয় নবী (.)। যারা আহলে বায়তের ভালোবাসা নিয়ে ইন্তেকাল করবে তাঁরা শহিদের মর্যাদা পাবে। এই মাহফিল চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আল্লামা আফিফ জিলানির বক্তব্য বাংলায় ভাষান্তর করে শোনান ড. আল্লামা সাইফুল ইসলাম আজহারি।

মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খা এমপি। তিনি বলেন, কারবালা ময়দানে সত্য ন্যায় ও ইনসাফের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)। তিনি মানবিক ইসলামের পতাকাই উড্ডীন করে গেছেন। ইয়াজিদ চির অভিশপ্ত। আর হযরত ইমাম হাসান (রা.) ও হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) জান্নাতের যুবকদের সর্দার। তাদের পদাংক অনুসরণের মাধ্যমে আমরা নাজাত পেতে পারি। বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, কারবালা প্রান্তরে ইসলাম দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। একদিকে মানবিক ইনসাফের পতাকা হাতে হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)। অন্যদিকে ইসলামের ধ্বজাধারী সহিংস ইসলামের ধারক ছিল ইয়াজিদ। ফলে সে ধিকৃত ও নিন্দার পাত্র হয়ে আছে।

শেষ দিনের মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন, জমিয়তুল ফালাহ শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সূফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, অহংকার লোভ হিংসা মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) যদি সেদিন ক্ষমতার লোভ করতেন, তবে তিনি তা পেতেন। কিন্তু ক্ষমতার লোভ প্রলোভন প্রত্যাখ্যান করে দ্বীনের ঝাণ্ডা সমুন্নতই করেছেন হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)। তিনি জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের প্রবর্তক আল্লামা জালালুদ্দিন আলকাদেরী (রহ.) এর অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি মাহফিলে সমবেত ও সম্পৃক্ত সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আল্লামা জালালুদ্দিন আলকাদেরী (রহ) এর বড় সন্তান ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক ব্যারিস্টার আবু সাঈদ মুহাম্মদ কাশেম। তিনি বলেন, আজ হতে ৩৯ বছর আগে এই মাহফিলের সূচনা করে গেছেন আমার বাবা আল্লামা জালালুদ্দিন আলকাদেরী (রহ.)। তিনি মনে প্রাণে আহলে বায়তে রাসূলের () ভালোবাসা গভীরভাবে ধারণ করতেন।

এ মাহফিলের জন্য বিশেষ ভাবে অবদান রাখা আলহাজ্ব সুফি মিজানুর রহমানের প্রতি তিনি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের খতিব আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মুহাম্মদ আলাউদ্দীন। আলোচক ছিলেন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আল্লামা সাইফুল আজম বাবর আল আযহারী। কোরআন মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন আন্তর্জাতিক ক্বারী শাইখ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী।

নাতে রাসুল (.) পেশ করেন শাহজাদা সৈয়দ আব্দুর রহমান আল জিলানি আল বাগদাদি, শায়ের এমদাদুল ইসলাম কাদেরী, মুহাম্মদ সাকী কাওসার। মাহফিলে অতিথি ছিলেন, হযরত বড়পীরের বংশধর শাহজাদা সৈয়দ আব্দুর রহমান জিলানি আল বাগদাদি, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল মহসিন মুহাম্মদ ইয়াহিয়া খান, মাওলানা আবুল হাশেম শাহ, ব্যাংকার ইসকান্দর আলম, মাওলানা আবু সাঈদ মুহাম্মদ হামেদ।

. জাফর উল্লাহ ও হাফেজ ছালামত উল্লাহর সঞ্চালনায় মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক ও মাহফিলের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগ, মোহাম্মদ খোরশেদুর রহমান, আনোয়ারুল হক, সিরাজুল মোস্তফা, প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমদ, দিলশাদ আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, এস এম শফি, মাইনুদ্দিন মিঠু, মাহবুবুল আলম, আবুল মনসুর সিকদার, জাফর আহমদ সওদাগর, সাহেদ করিম, অধ্যাপক অহিদুল আলম, নাজিব আশরাফ, আবদুর রহিম, রফিক আশরাফি, মাওলানা মুহাম্মদ জহুরুল আনোয়ার, আবদুর রহমান প্রমুখ।

মিলাদ কিয়াম পরিবেশন শেষে দেশ জাতির শান্তি সমৃদ্ধি কল্যাণ এবং ফিলিস্তিনিসহ বিশ্বের নিপীড়িত মানবতার পরিত্রাণ কামনায় মোনাজাত করা হয়। মাহফিলে মসজিদের নীচতলায় পর্দা সহকারে মহিলারা আলোচকদের বক্তব্য শুনেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকারফিউতে আটকে পড়াদের মাঝে সিটি মেয়রের খাবার বিতরণ
পরবর্তী নিবন্ধধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে সরকারকে উৎখাত করা যাবে না