ফুটবলের বিশ্বে নতুন করে ইতিহাস লিখল আফ্রিকার দেশ মরক্কো। প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে তারা। গতকাল সোমবার ভোরে চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোর এস্তাদিও নাসিওনাল হুলিও স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে ২–০ গোলে হারিয়ে চমক দেখিয়েছে মরক্কো তরুণরা। এটি শুধু অনূর্ধ্ব–২০ নয়, মরক্কোর ইতিহাসে যেকোনো বয়সভিত্তিক বিশ্বকাপেও প্রথম শিরোপা। বিশ্ব ফুটবলে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিচ্ছিল মরক্কো গেল কয়েক বছর ধরেই। সর্বশেষ কাতার বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ে সেমিফাইনালে খেলেছিল তারা। এবার লাতিন পরাশক্তি আর্জেন্টিনাকে কাঁদিয়ে প্রথমবারের মতো ফিফা অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল আফ্রিকার দেশটি। মেগা ফাইনালের নায়ক ইয়াসির জাবিরি। যার জোড়া গোল রেকর্ড ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার শিরোপা স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয়। ২০০৭ সালের পর এবারই অনূর্ধ্ব–২০ ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল লিওনেল মেসিদের উত্তরসূরীরা। সদ্য সমাপ্ত টুর্নামেন্টটিতে টানা ছয় ম্যাচ জিতে ফাইনালে ওঠা আর্জেন্টিনাকে শিরোপার দৌড়ে ফেবারিট ভাবা হচ্ছিল। যদিও ম্যাচ জুড়ে ৭৬% বলের দখল আর ২০টি শট নিয়েও প্রতিপক্ষের জালের দেখা পায়নি আর্জেন্টাইনরা। উল্টো যতবারই বল পায়ে এসেছে, প্রায় ততবারই আর্জেন্টাইনদের চাপে ফেলেছে মরক্কানরা। ম্যাচের মাত্র ১২ মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন পর্তুগালের শীর্ষ লিগের ক্লাব এফসি ফামালিকাওয়ের ফরোয়ার্ড ইয়াসির জাবিরি। এরপর ২৯তম মিনিটে তার গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আফ্রিকার দলটি। প্রথমার্ধে ২–০ গোলে পিছিয়ে পড়া আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়ার্ধে মরিয়া হয়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে। বল দখলে এগিয়ে থাকা এবং বেশ কয়েকটি আক্রমণ করা সত্ত্বেও মরক্কোর জমাট রক্ষণ ভাঙতে পারেননি। এই টুর্নামেন্টে মরক্কোর যাত্রা ছিল অনন্য। নকআউট পর্বে তারা পরপর দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে। এরপর আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ২০০৯ সালের পর প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপ জয়ের কীর্তি গড়ল তারা। ২০০৯ সালে সর্বশেষ আফ্রিকার দল হিসেবে এই ট্রফি জিতেছিল ঘানা। ইয়াসির জাবিরি, ওথমান মাম্মা, জেসিম ইয়াসিনদের হাত ধরে প্রথম যুব বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল মরক্কো। টুর্নামেন্টে অপরাজিত থাকা আর্জেন্টিনার জন্য ছিল এটি প্রথম হার, আর সেটিই এল ফাইনালে। সপ্তম শিরোপা জয়ের স্বপ্নে থাকা লাতিন পরাশক্তির স্বপ্ন শেষ হলো মরক্কোর তরুণদের জয়ের উল্লাসে। আর্জেন্টিনা এবারও ফাইনালে উঠেছিল তাদের সেরা দুই খেলোয়াড়কে ছাড়াই। বায়ার লেভারকুজেনের ক্লদিও এচেভেরি ও রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ তারকা ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো ছিলেন না দলে। মরক্কোর সিনিয়র দল অবশ্য আগেই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে। ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে তারা শেষ পর্যন্ত হেরেছিল ফ্রান্সের বিপক্ষে।












