ফারাক দেখছে না ফিলিস্তিনিরা

নেতানিয়াহু-বেনেত

| শনিবার , ৫ জুন, ২০২১ at ৭:৫২ পূর্বাহ্ণ

ইসরায়েলের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাফতালি বেনেতের আবির্ভাব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না পশ্চিম তীর ও গাজার ফিলিস্তিনিরা। এক জাতীয়তাবাদী নেতার স্থলে আরেক জাতীয়তাবাদী আসায় ফিলিস্তিন পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হবে না বলেও মনে করছে তারা। পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন করা সংগঠনের সাবেক প্রধান বেনেতকে উগ্র জাতীয়তাবাদী হিসেবে দেখছে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
সরকার গঠনের লক্ষ্যে বুধবার ইসরায়েলের ডান, বাম ও মধ্যপন্থি দলগুলো যে জোট করেছে তাতে কট্টর ডানপন্থি এ রাজনীতিকই ১২ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকা নেতানিয়াহুর স্থলাভিষিক্ত হতে চলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। খবর বিডিনিউজের।
এ দুই নেতার মধ্যে নানান বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও দুজনই গত মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জন্য হামাসকেই দায়ী বলে মনে করেন। এমনকী বৃহস্পতিবারও নিজের অবস্থান লুকোননি বেনেত। ইসরায়েলের চ্যানেল ১২-কে তিনি বলেন, সত্যিটা বলতেই হবে। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের এই বিবাদ মোটেও জায়গা নিয়ে নয়। ফিলিস্তিনিরা এখানে আমাদের অস্তিত্বই স্বীকার করে না। আরও কিছুদিন এরকম পরিস্থিতি চলবে বলে মনে হয় আমার। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট নিয়ে অবস্থানই বেনেতকে চিনিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট বলে মত ফিলিস্তিনি বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকর্তাদের। নেতানিয়াহুর চেয়ে মনোনীত প্রধানমন্ত্রী কম উগ্রবাদী নন, বলেছেন ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) প্রতিনিধি বাসেম আল-সালহি। প্রায় একই কথা শোনা গেছে অন্য কর্মকর্তাদের মুখেও। ইসরায়েলি নেতাদের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। তারা তাদের দেশের জন্য ভালো কিংবা খারাপ হতে পারে। আমাদের জন্য তারা সবাই খারাপ, বলেছেন গাজার সরকারি কর্মী ২৯ বছর বয়সী আহমেদ রেজিক। গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রক হামাসও বলছে, কে ইসরায়েল শাসন করছে, তাতে খুব একটা পার্থক্য দেখা যায় না।
ফিলিস্তিনিরা ডান, বাম, মধ্যপন্থি নামে পরিচিত কয়েক ডজন ইসরায়েলি সরকার দেখেছে। কিন্তু যখনই ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের প্রশ্ন এসেছে, তখন তারা সবাই বৈরি আচরণ করেছে। তাদের সবারই সমপ্রসারণের বৈরি নীতি ছিল, বলেছেন হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাশেম। এবার যে জোট সরকার ইসরায়েলের শাসনভার নিতে যাচ্ছে, তাতে প্রথমবারের মতো একটি ইসলামিক দলও থাকছে, যারা দেশটির ২১ শতাংশ আরব সংখ্যালঘুর ভোটে পার্লামেন্টে জায়গা করে নিয়েছে। আরব এ সংখ্যালঘুরা কাগজে কলমে ইসরায়েলের নাগরিক হলেও সাংস্কৃতিকভাবে ফিলিস্তিনি। ইসলামি এ দলটির নেতা মনসুর আব্বাস বলছেন, যে চুক্তির মাধ্যমে জোট হয়েছে তাতে আরব শহরগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন ও সহিংস অপরাধ মোকাবেলায় ১৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তবে শত্রুর সঙ্গে হাত মেলানোয় পশ্চিম তীর এবং গাজার বেশিরভাগ বাসিন্দাই এখন আব্বাসকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবেই দেখছেন। তিনি বিশ্বাসঘাতক। গাজায় নতুন যুদ্ধ শুরু করতে ভোট দিতে বললে তিনি কী করবেন? তিনি কি তা অনুমোদন করবেন, ফিলিস্তিনি হত্যায় অংশ নেবেন, প্রশ্ন গাজার ২১ বছর বাসিন্দা বাদরি কারামের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফেসবুকে রাজনীতিকদের বিশেষ খাতির বন্ধ হচ্ছে
পরবর্তী নিবন্ধআগুন লেগে ডুবে গেল ইরানের সবচেয়ে বড় রণতরী