নগরীর হালিশহর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে অপহৃত এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করেছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, পাহাড়তলী অলংকার শপিং কমপ্লেক্সে চাঁদনী জুয়েলার্সে গত ২৮ অক্টোবর দুজন মহিলা এসে বিভিন্ন স্বর্ণালংকার দেখে। চলে যাওয়ার সময় জুয়েলার্সটির মালিক সঞ্জিত কুমার রায়কে (৫০) তারা জানায় যে কিছু স্বর্ণালংকার বিক্রি করবে। সঞ্জিত রাজি হয়ে নিজের মোবাইল নম্বরটি দেন তাদের। ২৯ অক্টোবর সঞ্জিত কুমার রায়কে ফোন করে তারা স্বর্ণালংকারগুলো দেখার জন্য হালিশহর থানাধীন নয়াবাজার মোড়ে আসতে বলে। তিনি নয়াবাজার মোড়ে গিয়ে তাদের দেওয়া নম্বরে ফোন করলে তারা সঞ্জিত কুমার রায়কে নয়াবাজার মোড়ে তায়েফ হোটেলের বিপরীত পাশে রাস্তার উপর থাকা সিএনজির পাশে যাওয়ার জন্য বলে। তাদের কথামতো তিনি সিএনজি টেক্সিটির সামনে গেলে দুজন তাকে চাকু ধরে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক সিএনজিতে উঠিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। কয়েক মিনিট কথা বলার পর সেখানে আরো দুজন মহিলা আসে। তিনি তাদের দেখে চিনতে পারেন।
পরবর্তীতে চারজন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সঞ্জিতকে একটি বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলার একটি রুমের ভেতর আটকে রেখে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে ওই দুই মহিলার সাথে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামিরা তাকে কিল, ঘুষি মেরে খুন করে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে সঞ্জিত প্রাণ ও মানসম্মান বাঁচানোর তাগিদে ১,২০,০০০ টাকা দিতে রাজি হন। তিনি নিজের মোবাইল নম্বর থেকে পাশ্ববর্তী ব্যবসায়ী শংকর দেবের ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন করে নগদ এক লাখ বিশ হাজার টাকা জরুরি ভিত্তিতে সংগ্রহ করে পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার শপিং কমপ্লেক্সের নিচে আলিফ হোটেলের সামনে আসার জন্য বলেন।
সেখানে এসে আসামিদের একজনের হাতে টাকাগুলো দিতে বলেন। শংকর দেবের সন্দেহ হয়। তিনি বিষয়টি সঞ্জিতের ভাইকে জানান। পরবর্তীতে তারা দুজন হালিশহর থানায় এসে পুলিশকে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
হালিশহর থানা পুলিশের একটি টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেকে মুক্তিপণের দাবিকৃত টাকা নিতে আসা মো. আমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হালিশহর থানাধীন ১ নং পানির কল এলাকা থেকে মো. নুরুল ইসলাম, মো. সেলিম, আয়েশা আক্তার ফিরোজা ও রেহেনা আক্তার মীমকে গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার হয় অপহৃত সঞ্জিত কুমার রায়।