চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে সরকার ‘ফটিকছড়ি উত্তর’ নামে নতুন উপজেলা গঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রস্তাবিত উপজেলার সঙ্গে সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার আংশিক অংশ (১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড) যুক্ত করার প্রস্তাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে সুয়াবিল চুরখাঁহাট এলাকায় সুয়াবিল ইউনিয়ন ও পৌর অংশকে ‘ফটিকছড়ি উত্তর উপজেলায়’ অন্তর্ভুক্তি চেষ্টার প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বৃহত্তর সুয়াবিলবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ডা. এস. এম ফরিদ।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান, হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কোঅর্ডিনেটর প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া। তিনি বলেন, এ প্রস্তাব আইনসম্মত নয় এবং জনস্বার্থবিরোধী। ইতোপূর্বে মাঠ প্রশাসনের পাঠানো কোনো প্রতিবেদনে সুয়াবিল ইউনিয়ন বা পৌরসভার কোনো অংশ সংযোজনের সুপারিশ ছিল না। এ বিষয়ে জনগণের কোনো দাবিও ছিল না। সুয়াবিলবাসীর কাছ থেকে কোনো ধরনের গণশুনানি না করেই এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সুয়াবিল থেকে প্রস্তাবিত উপজেলার দূরত্ব অনেক বেশি। সুয়াবিল থেকে বাগান বাজারের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার আর ফটিকছড়ি উপজেলা সদরের দূরত্ব মাত্র ৪.৫ থেকে ৬ কিলোমিটার। এতে যোগাযোগব্যবস্থার দুরবস্থার কারণে আইনশৃঙ্খলা ও জনসেবার বদলে দুর্ভোগ বাড়বে। এরই মধ্যে ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ড নাজিরহাট পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় নতুন উপজেলায় নিলে দ্বৈত প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হবে বলেও দাবি করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাজিরহাট কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এস. এম নুরুল হুদা, এস. এম শফিউল আলম, এড. ইছমাইল। বক্তারা অভিযোগ করেন, জনগণের মতামত ছাড়াই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ প্রক্রিয়া এগোনো হচ্ছে। ভুল পরিসংখ্যান ও বিভ্রান্তিকর তথ্য তুলে ধরে মাঠ প্রশাসনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তারা। বক্তারা বলেন, আমরা সরকারের উন্নয়নমূলক উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে সুয়াবিল ইউনিয়ন ও নাজিরহাট পৌরসভার অংশবিশেষকে ফটিকছড়ি উত্তর উপজেলায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব অন্যায্য ও অযৌক্তিক। এটি বাস্তবায়িত হলে জনমনে গভীর ক্ষোভের সৃষ্টি হবে এবং আন্দোলন অনিবার্য হয়ে উঠবে। এই দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচিসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার হুঁশিয়ারি প্রদান করেন বক্তারা। এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মো. শাহজাহান, সাবেক পৌর কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন, গাজী আমান উল্লাহ, ওমর ফারুক মানিক, জয়নাল আবেদীন, মো. আমান উল্লাহ, নাছির উদ্দীন, মঞ্জু, আজিম, আলা উদ্দিন, মাহবুবুল আলম, নুরুল আলম, আবু জাফর ডালিম প্রমুখ। এর আগে মঙ্গলবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন সুয়াবিলবাসী। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।