অবহেলায় পড়ে আছে ফটিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি ও কাউখালী তিন উপজেলার সংযোগ সড়ক দৌলত মুন্সিরহাট থেকে বর্মাছড়ি বাজার সড়ক। কয়েক দশক ধরে এই সড়কে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এতে চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ির খিরাম ইউনিয়ন, খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ির বর্মাছড়ি ইউনিয়ন, রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালীর ফটিকছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।
একযুগ আগে ফটিকছড়ি উপজেলার দৌলত মুন্সির হাট থেকে মগকাটা পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার সড়কের ৩ কিলোমিটার সড়ক ডাবল ব্রিক সলিন দ্বারা উন্নয়ন করা হলেও ৩ কিলোমিটারের বেশির ভাগ অংশে ব্রিক সলিন উঠে গিয়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। অথচ সড়ক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এটি মেরামতে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ফলে, স্কুল–মাদ্রাসা–কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, অসুস্থ রোগী, কৃষক, শ্রমিক, সেনাবাহিনী, সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের দুর্ভোগ আর ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি অংশে এই সড়কের পাশে রয়েছে লক্ষ্মীছড়ি জোনের খিরাম আর্মি ক্যাম্প, সর্তা বনবিট, খিরাম উচ্চ বিদ্যালয়, ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি–বেসরকারি ৩টি মাদ্রাসা। এই সড়কের পাশে বসবাস করেন হিন্দু–মুসলিম, চাকমা, মারমা সমপ্রদায়ের প্রায় ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, স্বাধীনতার পর থেকে এই সড়কটি উন্নয়ন না হওয়ার ফলে এর খুবই করুণ অবস্থা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সড়কের কার্পেটিংয়ের মাধ্যমে উন্নয়ন ও সড়ক প্রশস্থকরণ করা জরুরি। এতে তিন উপজেলার মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির বেশিরভাগ অংশে ইট উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যান চলাচলে বিঘ্নিত সহ ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রায় সময় সড়কে যানবাহন অচল হয়ে পড়ছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় চলাচলকারীদের।
খিরাম ইউনিয়নের মগকাটা গ্রামের বাসিন্দা মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, রাস্তার সমস্যার কারণে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং হাসপাতালে যেতে অসুস্থ রোগী আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধ ও অসুস্থ মহিলাদের সমস্যা বেশি হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য পূর্ণ মাসি চাকমা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কটি অবহেলায় পড়ে আছে। এ সড়ক দিয়ে যাত্রী ও যান চলাচলে বিলম্ব হচ্ছে। এতে জেলা হেডকোয়ার্টার, উপজেলা পরিষদ, এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের সঙ্গে জনগণের চিকিৎসা ও দাপ্তরিক কাজে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সড়কটির কার্পেটিং মাধ্যমে উন্নয়ন হওয়া প্রয়োজন।
খিরাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন সৌরভ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে সড়কটি। হাজার মানুষের চলাচলের রাস্তাটি সংস্কার করা খুবই জরুরি। সংস্কারের অভাবে বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত–বিক্ষত হয়ে ধসে যাচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় জন–দুর্ভোগ বাড়ছে। রাস্তাটি সংস্করণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার লিখিত আবেদন সহ মৌখিকভাবে জানিয়েছি। এখনো কোন কাজ হয়নি।
উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ সড়কটির উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পে প্রস্তাবনা দেয়া আছে। প্রকল্প থেকে অনুমোদন হয়ে গেলে সড়কটি ১৮ ফুট ধরে উন্নয়ন করে দেওয়া হবে। এছাড়া সড়কটি তিন জেলার সংযোগ সড়ক হওয়ায় আন্তঃজেলা সংযোগ প্রকল্পে প্রস্তাবনা আছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি উন্নয়ন করা হলে তিন জেলার মানুষ উপকৃত হবে।











