ফটিকছড়ি সীমান্তে সেনাবাহিনীর অভিযানে একে ৪৭ রাইফেল, বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র এবং গোলাবারুদসহ মগ লিবারেশন পার্টি (এমএলপি) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠনের ৫ সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি এবং ফটিকছড়ির কাঞ্চননগর সীমান্তের দুইল্যাছড়ি ও বটতলীর গহীন অরণ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ শনিবার (২৫ ফেব্রুয়অরি) ভোর রাতে এ সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়।
গ্রেফতার আসামীরা হলো খাগড়াছড়ির মানিকছড়ির মৃত আপ্রুসি মারমার ছেলে প্রদ্বীপ মারমা(২৫), কংক্য মারমার ছেলে চহলা মারমা (২১), বান্দরবানের মনু সিং মারমার ছেলে উমং সিং মারমা (২২), খাগড়াছড়ির ক্যউ চিং মারমার ছেলে উসাজাই মারমা (২১), রাঙ্গামাটির থুইবাই মারমার ছেলে অংথোয়াইচিং মারমা (২৫)।
এ সময় সন্ত্রাসীদের আস্তানা থেকে ১টি একে-৪৭, ৪টি মর্টার, ১টি পয়েন্ট ২২ মি.মি. রাইফেল, ১টি এম-১, ৫ জোড়া ইউনিফর্ম, ১টি চীনা পিস্তল, ১টি এলজি শর্ট ব্যারেল, ৩৬ রাউন্ড এলজি এ্যামো, ৭ রাউন্ড একে-৪৭ এ্যামো, ২৪ রাউন্ড এম-১ এ্যামো, ৬টি মোবাইল ফোন সেট, ১১০ রুপি ভারতীয় মুদ্রা, ২টি ওয়াকিটকি, ৬টি বাউন্ডার, মাইন তৈরির সরঞ্জাম ও ৩৭টি কাঁচের বোতলসহ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
সূত্র জানিয়েছে, গুইমারা রিজিয়নের একদল সেনা সদস্য টানা ১০ ঘণ্টা অভিযান চালায়।
মানিকছড়ি উপজেলার তিনটহরী ইউনিয়ন ও চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ঐ এলাকায় তাদের আধিপত্যের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে গুইমারা রিজিয়নের আওতাধীন লক্ষীছড়ি সেনা জোনের অধীনস্থ সিন্দুকছড়ি ও লক্ষীছড়ি জোনের অভিযোনে আটক হয় সন্ত্রাসীরা।
দুপুরে গ্রেফতারদের মানিকছড়ি সেনা ক্যাম্পে আনা হয়। সেখানে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলা-বারুদের বিবরণ উপস্থাপন করা হয়।
সূত্রটি আরো জানায়, অনগ্রসর জনপদ দুইল্যাছড়ি, বটতলী গহীন অরণ্যে সশস্ত্র সন্ত্রাসীগোষ্ঠির চাঁদাবাজি ও সশস্ত্র অবস্থানের গোপন তথ্যে শনিবার ভোর সাড়ে ৩টার পর লক্ষ্মীছড়ি জোনের সেনাবাহিনী ও ফটিকছড়ি থানা পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়।
সকাল ১১টার পর নির্জন একটি বসতঘরে লুকিয়ে থাকা এবং একটি চৌকির নিচে স্তুপ করে রাখা বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ সশস্ত্র সংগঠন মগ লিবারেশন পার্টির ৫ সন্ত্রাসীকে আটক করা হয় পরে দুপুর সাড়ে ১২টায় আটক সন্ত্রাসী ও উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্র মানিকছড়ি সেনা ক্যাম্পে আনা হয় এবং পরে ফটিকছড়ি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
উল্লেখ্য, মগ লিবারেশন পার্টি (এমএলপি) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা রয়েছে বান্দরবানের দুর্গম অঞ্চলে। তারা মারমাদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্র গঠনের কথা প্রচার করে আসছে। এতে সরলপ্রাণ অনেক যুবক এ দলে যোগ দিয়েছে। পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে এই বাহিনীর প্রথম কোনো সদস্য আটক হলো যৌথ বাহিনীর কাছে।
ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাসুদ বলেন, খাগড়াছড়ি-ফটিকছড়ি সীমান্তের কাঞ্চননগর বটতলী এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অবস্থানের খবরে যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলাসহ পরবর্তী কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
