ফটিকছড়ি, রাউজান ও আনোয়ারা মুক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিবাহিনী

আজাদী ডেস্ক | শনিবার , ২ ডিসেম্বর, ২০২৩ at ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ

১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার দামাল সন্তানেরা জননীতুল্য দেশকে হানাদার বাহিনীর হাত থেকে উদ্ধার করে চির মুক্তির সন্ধানে প্রচণ্ড গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। আর প্রতিদিন কোণঠাসা হতে থাকে পাক বাহিনী। নভেম্বরের শুরু থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করতে থাকে। সীমান্ত এলাকাগুলোতে সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করলে মুক্তিবাহিনীর সাথে যোগ দেয় ভারতীয় বাহিনী। সাথে সাথে পুরো দেশজুড়ে চলছিল গণপ্রতিরোধ। অবরুদ্ধ বাংলায় সৃষ্টি হয় অনেক মুক্ত অঞ্চল। ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর সমগ্র বাংলা উত্তাল হয়ে ছিল মুক্তির সংগ্রামে। অপ্রতিরোধ্য বাঙালির বিজয়ের পথে পিছু হটতে থাকে হানাদার বাহিনী। মুক্তিবাহিনী ক্রমশ সম্মুখ যুদ্ধে অগ্রগতি লাভ করে।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, রাউজান এবং আনোয়ারা মুক্ত করতে মুক্তিবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে মরণপণ লড়াইয়ে। অধিকাংশ স্থান তাদের দখলে আনতে সক্ষম হয়। নরসিংদীর ঘোড়াশালে মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা একটি পাকিস্তানি ক্যাম্পের চারদিক থেকে আক্রমণ করে ২৭ জন হানাদারকে হত্যা করে। সেখান থেকে তারা প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পঞ্চগড়ে সার্কেল আকৃতিতে পাকিস্তানি বাহিনী দুটি ডিফেন্স লাইন তৈরি করেছিল। গভীর রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর্যুপরি আক্রমণে পাকবাহিনী পঞ্চগড় ছেড়ে চলে যায়। নেত্রকোনার বিরিসিরির বিজয়পুর এলাকায় মুক্তিবাহিনী গেরিলা হামলা চালায় এবং পাঁচজন পাকিস্তানি জঙ্গি হত্যা করে। সেখানে তারা ২১ জন সশস্ত্র রাজাকারকে বন্দী করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া উপজেলায় আজমপুর রেলওয়ে স্টেশনটিকে মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীর দখল থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়। কিন্তু পাকিস্তানিরা শক্তি সঞ্চয় করে স্টেশনটিকে আবারও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের সুসংগঠিত করে তিন দিক থেকে কৌশলে আক্রমণ পরিচালনা করলে পাকিস্তানিরা আজমপুর রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে পালিয়ে যায়।

ভুরুঙ্গামারী, কমলাপুর, পঞ্চগড়, আখাউড়া, বনতারা, শমশেরনগর ও পার্বত্য চট্টগ্রামে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর প্রচণ্ড সংঘর্ষ ঘটে এবং পাক বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। ঢাকার রামপুরা বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র ও চট্টগ্রামের পাঁচটি বিদ্যুৎ সাব স্টেশন ও দুটি পেট্রোল পাম্প বোমা বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত হয়। পাক হানাদার বাহিনীর হামলায় একাত্তরের এই দিনে রামপুরা ও মালিবাগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন। ডিসেম্বরের এ সময়টাতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে তখন মুক্তিবাহিনীর সাফল্যের খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রচার হতে শুরু করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসব ওসি ও ইউএনওকে বদলির নির্দেশ ইসির
পরবর্তী নিবন্ধহেভিওয়েট স্বতন্ত্র নিয়ে টেনশনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা