ফটিকছড়িতে মুন্নী আক্তার (৩০) নামে এক প্রসূতিকে ‘ভুল’ চিকিৎসা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে নাজিরহাট সেন্ট্রাল পার্ক হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে। গত বুধবার ভুল চিকিৎসার কথাটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে রাত ১১টার দিকে উত্তেজিত জনতা হাসপাতালটি ঘিরে ফেলে ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এসিল্যান্ড এবং থানা পুলিশ গিয়ে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এদিকে ওই রোগী বর্তমানে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। তদন্ত কমিটির সভাপতি হলেন– উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরেফিন আজিম, সদস্য সচিব ডা. মনীষ সাহা রায়, সদস্য হলেন– ডা. শামীমা আক্তার ও ডা. রানা দে। গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এক প্রসূতির ‘ভুল’ চিকিৎসার অভিযোগ উঠলে স্থানীয় জনতা হাসপাতালটি ঘেরাও করে। সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাসে পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ঘটনার সত্যতা উদঘাটনের জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অবশ্যই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল ঘটনা উন্মোচন করা হবে।
রোগীর চাচাতো ভাই মো. সাব্বির হোসাইন জানান, ভুক্তভোগী মুন্নী আক্তার বর্তমানে চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে আইসিউতে ভর্তি আছেন। সকালে রোগী চমেক হাসপাতালে থাকার সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি রোগীর অবস্থা দেখেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে তার অপারেশন হওয়ার কথা থাকলেও তা করা সম্ভব হয়নি। আগামী ২দিন অপেক্ষা করতে হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুন্নী আক্তারের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত রোববার ওই হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে তার আরো একটি ছেলে সন্তান হয়। কিছুদিন পূর্বে তার স্বামী অসুস্থ হয়ে মারা যান। মুন্নী ফটিকছড়ি পৌরসভা ২নং ওয়ার্ডের জামাল বেপারির বাড়ি মৃত মোহাম্মদ ফুরকানের স্ত্রী।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা.আরেফিন আজিম বলেন, ঘটনার সাথে সাথে অভিযুক্ত মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ পলাতক। তাদের কারো সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে রোগীর সিজারের পর রক্তপাত হচ্ছিল এবং ওই রক্তপাত বন্ধ করতে হয়তো আরেকটি অপারেশন করা হয়েছিল। এরপর থেকে রোগীর শারীরিক অবস্থা খারাপ দিকে যাচ্ছিল। আমরা উভয় পক্ষের সাথে বসে কথা বলে জানতে পারব ভুল চিকিৎসা হয়েছে কিনা বা আসল সমস্যাটা কোথায়।