চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ভাইস–চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেছেন, প্লাস্টিক দূষণের কারণে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম হুমকির সম্মুখীন। প্লাস্টিক শুধু আমাদের না বরং আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ক্ষতিকর। প্লাস্টিক দূষণ পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থায় বাধা সৃষ্টি করে জলাবদ্ধতা তৈরী করছে, প্রাণী এবং মানুষের স্বাস্থ্যকে বিপন্ন করছে। আমরা যদি প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারি তাহলে তা আমাদের টেকসই ভবিষ্যত গড়ার ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা হিসেবে কাজ করবে।
গতকাল চুয়েটের বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে আয়োজিত প্লাস্টিক ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগের ব্যবহারযোগ্যতা মূল্যায়নের লক্ষ্যে ঝঈওচ প্লাস্টিকস প্রকল্প চুয়েটে মাসব্যাপী পরীক্ষামূলক পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে উপস্থিত ছিলেন ঝঈওচ প্লাস্টিকস প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক পরিচালক অধ্যাপক ড. মোছা. ফারজানা রহমান জুথী এবং বৈজ্ঞানিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আসিফুল হক। প্রকল্প প্রতিনিধি হিসেবে জার্মানির বাউহাউস ইউনিভার্সিটি থেকে উপস্থিত ছিলেন দুইজন জার্মান প্রতিনিধি সেন্তা রোজমেরি বার্নার এবং ফিলিপ লোরবার (সাইন্টিফিক কো অর্ডিনেটর, এসসিআইপি প্লাস্টিক প্রজেক্ট)। চুয়েটের বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে সকল ব্যাচের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা–কর্মচারীরা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই উদ্যোগের সূচনা হয়। অংশগ্রহণকারীরা প্রীতি খেলায় অংশ নেন এবং উপহার হিসেবে একটি পাটের ব্যাগ গ্রহণ করেন যা তাদের পরিবেশবান্ধব অভ্যাস গড়ে তুলতে উৎসাহিত করবে। মাসব্যাপী পরীক্ষামূলক পর্যায়ে এই পাটের ব্যাগ পুনঃব্যবহার করতে এবং নির্দিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া পেইজে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে উৎসাহিত করা হয়, যার মাধ্যমে তারা ডিসকাউন্ট কুপন অর্জনের সুযোগ পাবেন। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে, চুয়েট ক্যাম্পাসের নির্বাচিত কিছু দোকানে পাটের ব্যাগ কেনার সুযোগ থাকবে। শিক্ষার্থীরা ব্যাগ ক্রয় করে সেটি পুনঃব্যবহার করার ছবি নির্দিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে আপলোড করলে তারা পুরস্কার (ডিসকাউন্ট কুপন) পাওয়ার সুযোগ পাবেন, যা টেকসই অভ্যাস গড়ে তোলার পাশাপাশি প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাসে সহায়তা করবে। ইতোপূর্বে এ প্রকল্পের পক্ষ থেকে চুয়েট ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী হল গুলোতে এবং আবাসিক এলাকায় প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হার নির্ণয় এর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সাথে স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মাঝে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসেবে প্লাস্টিকের ব্যাগের বিপরীতে পাটের ব্যাগের ব্যবহারে অনুপ্রাণিত করতে এই উদ্যোগটি শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে যে চলমান পরীক্ষামূলক পর্যায়টি প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগের ব্যবহারযোগ্যতা মূল্যায়নের একটি কার্যকর পাইলট মডেল হিসেবে কাজ করবে। এটি চুয়েট কমিউনিটিতে পরিবেশগত সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।