প্লাস্টিকের বস্তায় সয়লাব ভোগ্যপণ্যের বাজার

পাটের বস্তার দাম বেশি, তদারকিও কম ৯০ শতাংশ পণ্য পরিবহন ও মজুদ প্লাস্টিকের বস্তায়

জাহেদুল কবির | বুধবার , ২ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

কয়েক দফা প্রজ্ঞাপন জারির পরও ভোগ্যপণ্যের বাজারে প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহার বন্ধ হচ্ছে না। পরিবেশ সংরক্ষণ এবং পাটের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করতে ৯ বছর আগে প্রথমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়। সেই সময় ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার, চিনি সংরক্ষণ ও পরিবহনে বাধ্যতামূলকভাবে পাটের বস্তা ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে আরো দুইবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনে ১৯টি পণ্য পরিবহনে পাটের বস্তার ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে তদারকির অভাবে এখনো পাটের বস্তার ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারছে না সরকার।

চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীর চালের আড়তদাররা জানান, বর্তমানে বাজারে প্লাস্টিকের বস্তার ছড়াছড়ি। উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি অঞ্চল থেকে ১০ শতাংশ মতো পাটের বস্তায় চাল আসছে। শুধু ধানচাল নয়, দেশের মোট ভোগ্যপণ্যের ৯০ শতাংশই পরিবহন ও মজুদ হচ্ছে প্লাস্টিক বস্তায়। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, বর্তমানে একটি পাটের বস্তার দাম পড়ছে প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। প্লাস্টিকের বস্তার দাম পড়ে ১৫২০ টাকা। তাই ব্যবসায়ীরাও পাটের পরিবর্তে প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

খাতুনগঞ্জের আটাময়দার একজন ব্যবসায়ী জানান, পাটের তৈরি বস্তায় আটাময়দা পরিবহন করাটা কঠিন। কারণ পাটের বস্তায় আঁশ ও ছিদ্র থাকে। আটা ও ময়দার সাথে এসব আঁশ মিশে যায়। অনেক সময় ধুলোবালি বস্তার ছিদ্র দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। এতে আটাময়দার গুণগত মান নষ্ট হয়। তবে পাটের বস্তা আটাময়দার জন্য উপযোগী করে তৈরি হলে এটি ব্যবহার আমাদের আপত্তি নেই। আটাময়দার ক্ষেত্রে সুবিধাসুবিধার কথা বিবেচনা করে সরকারকে এই বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার।

চট্টগ্রাম রাইচ মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিক উল্লাহ আজাদীকে বলেন, অনেক ক্রেতাই পাটের বস্তার পরিবর্তে প্লাস্টিকের বস্তায় পণ্য নিতে বেশি পছন্দ করেন। কারণ পাটের বস্তার চেয়ে প্লাস্টিকের বস্তায় পণ্য বেশি পাওয়া যায়। বাজারে এখন পাটের বস্তাতেও ধানচাল পরিবহন হচ্ছে। তবে পরিমাণে অনেক কম।

পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসএম নিজাম উদ্দিন বলেন, আড়তদারদের যেভাবে মিলাররা চাল পাঠাচ্ছেন আমরা সেভাবেই বিক্রি করি। ফলে বাজারে এখন প্লাস্টিক বস্তার ছড়াছড়ি হয়ে গেছে। আড়তগুলোতে অভিযান না চালিয়ে প্রশাসনের উচিত ধানচালের মোকামগুলোতে নজরদারি বাড়ানো। পণ্য প্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের বস্তার পরিবর্তে পাটের বস্তার ব্যবহার নিশ্চিত সেখান থেকেই করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবোয়ালখালী বিএনপির দেড় শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
পরবর্তী নিবন্ধচাক্তাইয়ে আড়াই টন পলিথিন জব্দ দুই গোডাউন সিলগালা