প্লট বুঝিয়ে না দিলে নগর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের হুমকি ৯৮ গ্রাহকের

চসিকের লেকসিটি প্রকল্প

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৪ মার্চ, ২০২৩ at ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) লেক সিটি হাউজিং প্রকল্পে টাকা পরিশোধ করেও প্লট বুঝে না পাওয়া ৯৮ জন গ্রাহক তাদের প্লট বুঝিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আসন্ন রমজান মাসের মধ্যে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না হলে নগর ভবনের সামনে অবস্থান ও আমরণ অনশনসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন প্লট বঞ্চিতরা। সংবাদ সম্মেলন থেকে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হচ্ছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব সদস্যকে প্লট বরাদ্দ দেওয়া, একই স্থানে প্লট মালিকদের মালিকানা দলিল হস্তান্তর করা, লেক সিটি প্রকল্পের বিপরীতে চসিকের রাজস্বখাতে আদায়কৃত সকল অর্থের এবং উন্নয়ন খাতের সঠিক ব্যয়ের হিসাব দেওয়া, তৎকালীন মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সময় প্রস্তাবিত পরিকল্পনা ও নকশা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন করা এবং আবেদন করা সকল সদস্যদের মাঝে প্লট বরাদ্দ দেয়া।

প্লট বঞ্চিতদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মো. আব্দুল হক, মো. সালাহ উদ্দিন, মোহাম্মদ নইমুল আলম, নূরুল আলম, মো. আব্দুল কুদ্দুস, রোকেয়া বেগম, মো. আব্দুল মান্নান, শফি আহমদ চৌধুরী, সফুরা বেগম, সীমা বড়ুয়া ও মো. নুরুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০০৬ সালে চসিকের লেক সিটি আবাসন প্রকল্পে প্লট কিনতে টাকা পরিশোধ করেছিলেন তারা। ওই সময় ৫৪৮ জনের কাছ থেকে টাকা নেয় চসিক। এর মধ্যে ৪৫০ জনকে প্লট বুঝিয়ে দেয়া হয়। ৯৮ জন এখনো প্লট বুঝে পাননি। চসিকের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ‘এ’ ‘বি’ ও ‘সি’ তিন ব্লকে প্লট বুঝিয়ে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বুঝিয়ে দেয়া ৪০ জন গ্রাহক হচ্ছেন ‘এ’ ও বি’ ব্লকের।

লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, ২০০৬ সালে চসিকের লেক সিটি আবাসন প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তি দেয় চসিক। এতে একজন গ্রাহককে ৩ কাঠা সমতল প্লট বুঝিয়ে দেয়ার কথা ছিল। ওই সময় ৫৪৮টি আবেদন জমা পড়ে। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে তৎকালীন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী জায়গা অপ্রতুলতার কারণ দেখিয়ে ৩ কাঠার পরিবর্তে প্রতি গ্রাহককে আড়াই কাঠা করে প্লট বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং সে আলোকে প্রতি গ্রাহকের কাছ থেকে পেঅর্ডারের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করে চসিক। প্রতিজন গ্রাহক ২২ লাখ টাকা করে পরিশোধ করে। এর মধ্যে প্রথম দফায় ১৭ লাখ টাকা ও দ্বিতীয় দফায় আরও ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেন আবেদনকারীরা।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কেউ গ্রামের বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি, পেনশনের টাকা, প্রবাসে উপার্জিত অর্থ আবার কেউ স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে এ টাকা জমা দেয়। অল্প সময়ের মধ্যে প্লট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও অনিয়মের কারণে প্লট পাননি বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী প্লট বঞ্চিতদের পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে সমস্যা সমাধান করে প্লট সংক্রান্ত ব্যাপারে দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু সাত মাস পার হলেও কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে দাবি করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহালদা থেকে উত্তোলন করা ৮ ট্রাক বালু জব্দ, জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধআমেরিকায় দেউলিয়া আরও এক জনপ্রিয় ব্যাংক