শিক্ষা,পরিবেশ ও মননশীলতা একে অপরের পরিপূরক শুধু নয় অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত। একটা শিশু ভুমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে এর মধ্যে যেভাবে বেড়ে উঠবে সেভাবেই সে ব্যক্তি হিসাবে গঠিত হবে। তাই প্রতিটি মানুষের জিনগত স্বভাবের চেয়ে তাকে গঠন করার ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখে শিক্ষা ও পরিবেশ। যেকোন শিশুর এই শিক্ষা শুরু হয় প্রথমে পরিবার থেকেই। তারপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
সেক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বলা যায় যেকোন শিশুর চারিত্রিক ও মানসিক বিকাশ পজেটিভ কিংবা নেগেটিভ হবে তার দায় বর্তাবে তার নিজের পরিবারের উপর এবং সে যে প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছে সেখানে কর্মরত শিক্ষক/শিক্ষিকার ওপর।
শিশুদের সাথে বড়রা যেভাবে আচরণ করবে,শিক্ষা দেবে সেটাই তারা অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করে গ্রহণ করে বেড়ে উঠবে চিন্তার জগতে। বড় হয়ে তার প্রতিফলন দেখা যাবে তার আচরণে,চিন্তার গভীরতায় ও মন-মানসিকতায়।এই সহজ বিষয়টি অধিকাংশ পরিবারের সদস্যরা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলি গুরুত্ব দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন আজ।
তারা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তথা ভালো রেজাল্টকেই ব্যক্তি ভালো বা মন্দ তার মাপকাঠি হিসাবে বিবেচনা করেন। ধরেই নেন পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া ছেলে/মেয়েটি নিঃসন্দেহে খুবই ভালো। ভুলে যান মেধা অনুশীলনের দ্বারা বৃদ্ধি বা হ্রাস পেতে পারে। তার উপর কখনো মানসিকতা ও চরিত্র সুন্দর -অসুন্দর, ভালো বা মন্দ মোটেই নির্ভর করে না।
পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়া একটি বাচ্চা হতে পারে অসাধারণ মানবিক ও চারিত্রিক গুণাবলী সম্পন্ন যা হয়তো জিপিএ ফাইভ পাওয়া বাচ্চাটি অর্জন করতে পারে নি। বর্তমানে আমাদের সমাজে যেভাবে পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর পাওয়াকেই বাচ্চাদের গড়ে তোলার একমাত্র পথ বলে বিবেচিত হচ্ছে তাতে বস্তুত সার্বিকভাবে প্রকৃত মানুষ হয়ে গড়ে ওঠার শিক্ষাকে গৌণ করে দেওয়াই হচ্ছে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না সমাজে সার্টিফিকেটধারী লোকের যেমন প্রয়োজন তার চেয়ে ততোধিক প্রয়োজন মানবিক গুণ সম্পন্ন সৎ ও নৈতিক মানুষ।