প্রয়োজনে বাইরে থেকে বালু এনে হলেও পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে বালুচর করার জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, সি-বিচের অন্যতম আকর্ষণ ও উপাদান হচ্ছে বালুচর। এখানে আগে যে পরিমাণ বালুচর ছিল সেটা হারিয়ে গেছে। বিচ বলতে বালুচরকেই বোঝায়। দুবাই সি-বিচে প্রথমে বালু ছিল না, পরে বাইরে খেকে বালু এনে সেখানে বালুচর বানানো হয়েছে। গতকাল শনিবার নগরের পতেঙ্গা সি-বিচে সিডিএ আয়োজিত সিটি আউটার রিং রোডে সাইকেল লেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. হাছান মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, বোর্ড সদস্য মো. জসিম উদ্দিন, কে বি এম শাহজাহান, জসিম উদ্দিন শাহ, এম আর আজিম, রোমানা নাছরিন, সচিব আনোয়ার পাশা প্রমুখ।
হাছান মাহমুদ বলেন, প্রথম থেকেই সিডিএর কাছে নিবেদন ছিল এখানে একটা সাইকেল লেইন রাখার। আমি বিদেশে পড়ালেখাকালে সাইকেল চালিয়ে ভার্সিটিতে আসা-যাওয়া করতাম। আমাদের শহরগুলোতেও এ ধরনের সাইকেল লেইন করতে পারলে ভালো হতো। চট্টগ্রাম শহরের দুয়েকটি রাস্তায় সাইকেল লেইন করার জন্য সিডিএকে অনুরোধ জানান তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজ থেকে কয়েকবছর আগে মানুষ ধারণা করেনি পতেঙ্গা সৈকতে এমন একটি সি-বিচ হবে। এটি যখন প্রথম উন্মুক্ত করেছিল, সেটি সবাইকে অবাক করেছিল। একেবারে দুবাই সি-বিচের আদলে এত সুন্দর করে এটাকে সাজানো হয়েছে। তিনি বলেন, পতেঙ্গা সি-বিচ আগেও ছিল, পৃথিবীর পরিবর্তনের সাথে সাথে সেটির আধুনিকায়ন প্রয়োজন হচ্ছে, যেটি বহুবছর হয়নি। বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরে সিডিএর মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রেক্ষিতে সি-বিচের সৌন্দর্যবর্ধন হয়েছে।
তিনি বলেন, যারা ইতিহাস বিকৃতি ঘটায়, তারা ইতিহাসের পাতায় এক ধরনের দুস্কৃতকারী। স্বাধীনতার এই সুবর্ণজয়ন্তীতে আমি আশা করবো, এতদিন ধরে বিএনপিসহ যে সমস্ত দল এই ভুলগুলো করেছেন, তারা সেই ভুল থেকে বের হয়ে আসবে, তাহলেই দেশের মানুষ তাদের সাধুবাদ দেবে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম তারা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর বছরে সত্যটাকে মেনে নেবেন। ইতিহাসকে মেনে নেবেন। কিন্তু তারা জন্মলগ্ন থেকে যে ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়ে আসছে, ৭ মার্চ পালন করতে গিয়েও সেটি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কদিন আগে আমরা ৭ মার্চ উদযাপন করেছি, যেদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন : ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’, পরেরদিন পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের সদর দপ্তরে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল, চতুর শেখ মুজিব কার্যত পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিলেন। আমাদের চেয়ে-চেয়ে তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় ছিল না। তাকে আবার সেজন্য অভিযুক্তও করা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এমনভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, জনগণ বুঝতে পেরেছিল কি করতে হবে। তখন সবাই মাঠে নেমে পড়েছিল, ‘বাঁশের লাঠি তৈরি কর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’ স্লোগানে। কিন্তু পাকিস্তানিরা সেটা বুঝতে পারেনি, বুঝলেও অভিযুক্ত করতে পারেনি। এখন দেখলাম ৭ মার্চ পালন করতে গিয়ে বিএনপি যে বক্তব্য দিল, পাকিস্তানিরা যেমনি বুঝতে পারেনি, তেমনি বিএনপিও বুঝতে পারেনি।