নগরীর হালিশহর থানাধীন বড়পোলের রোজ উড হোটেল থেকে উদ্ধার অজ্ঞাত গলাকাটা নারী লাশের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ। তিনি হালিশহরের বি ব্লকের বাসিন্দা। স্বামী ও তিন সন্তান নিয়ে ওই এলাকাতেই বসবাস করে আসছিলেন। বনিবনা না হওয়ায় গত এক বছর ধরে বাবার বাড়িতে ছিলেন।
এর আগে থেকে আশরাফুল ইসলাম প্রকাশ সুজন নামে এক যুবকের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু সেখানেও ভালো থাকতে পারলেন না। আরেক জনের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছে, এমনটাই আঁচ করে বসেন প্রেমিক। এরই ধারাবাহিকতায় পরিকল্পনা করে ওই নারীকে খুন করে সেই প্রেমিক সুজন।
হালিশহর থানার ওসি মো. মোস্তাফিজুর রহমান আজাদীকে বলেন, খুন হওয়া নারীর স্বামী জাহাঙ্গীরের বাড়ি নোয়াখালীতে। সুজনের বাড়িও নোয়াখালীতে। চাচা-ভাতিজার সম্পর্ক তাদের। সে মতে ওই নারীকে চাচী বলেই ডাকতেন সুজন। তাদের মধ্যে ছিল গভীর প্রেমের সম্পর্ক। কিন্তু এজাজ নামের পাকিস্তানি আরেক জনের সাথে প্রেমে জড়িয়েছে, এমন সন্দেহে ঢাকা থেকে এসে ওই নারীকে খুন করে সুজন।
ওসি বলেন, আমরা সুজনকে ঢাকায় তার মামার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছি। বাড়ি নোয়াখালী হলেও সে ঢাকায় থাকে। মঙ্গলবার (আজ) তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
হালিশহর থানা পুলিশ জানায়, দায় থেকে রেহাই পেতে সুজন অনেক চেষ্টা করেছে। কামরুল ইসলাম নামের এনআইডির ফটোকপি উপস্থাপন করে হোটেল রুম বুকিং দেন। এরপর খুন করে রক্তাক্ত পোশাক পরিবর্তন করে হোটেল থেকে বের হয়ে ফের ঢাকায় চলে যান। এর আগে পানির সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খুন হওয়া নারীকে তা খাওয়ানো হয়। একপর্যায়ে সে অচেতন হয়ে পড়লে গলা ও পেটে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে রোজ উড হোটেলের ৮০২ নম্বর কক্ষ থেকে এক রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তখনও ওই নারীর পরিচয় নিশ্চিত হয়নি। হোটেলের ম্যানেজারের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন সেদিন। তখন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে কামরুল হাসান নামের একটি এনআইডি কার্ডের ফটোকপি দেখিয়ে এক নারীকে ৮০২ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। একপর্যায়ে সুজন হোটেল রুম থেকে একা বের হয়ে যান। পরবর্তীতে কোনো সাড়াশব্দ না থাকায় হোটেল ম্যানেজারের সন্দেহ হয়।