প্রীতিলতার আত্মত্যাগ নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করবে

আত্মাহুতি দিবসে প্রশাসক সুজন

| বৃহস্পতিবার , ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের অগ্নিকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার জীবনের জয়গান গেয়ে গেছেন। যদি বর্তমানকে চিনতে হয় অতীতকে জানতে হবে। আমাকে-আপনাকে আরো একজনকে কল্পনা দত্তকেও খুঁজে নিতে হবে। যিনি ইউরোপিয়ন ক্লাব আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সবার আগে জানতে হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
গতকাল বুধবার পাহাড়তলীস্থ রেলওয়ে স্কুলের সম্মুখে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আত্মাহুতি দিবসে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন উপরোক্ত মন্তব্য করেন। তিনি আরো বলেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের একজন অন্যতম বাঙালি নারী বিপ্লবী। তৎকালীন সময়ে এই নারী সূর্য সেনের নেতৃত্বে তখনকার ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁকে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। প্রীতিলতার আত্মত্যাগ নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করবে। এসময় প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চট্টল ইয়ুথ কেয়ারের মহাসচিব অরুণ চন্দ্র বণিকসহ স্থানীয় রেলওয়ে শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম ইয়ুথ কয়ার : ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক বীরকন্যা প্রীতিলতার আত্মাহুতি দিবস উপলক্ষে গতকাল বুধবার আমবাগানে প্রীতিলতার ভাস্কর্যস্থলে চট্টগ্রাম ইয়ুথ কয়ারের উদ্যোগে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা কয়ার মহাসচিব অরুন চন্দ্র বণিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের সশস্ত্র বিপ্লবী ও শহীদ বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার প্রথম নারী আত্মোৎসর্গকারী। প্রীতিলতার জন্ম চট্টগ্রামে। তিনি চট্টগ্রামের ডা. খাস্তগীর স্কুলের মেধাবী ছাত্রী হিসেবে ১৯২৭ সালে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পাস করেন। ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সমগ্র ঢাকা বোর্ডে প্রথম হবার কৃতিত্ব ছিল তাঁরই। ১৯৩১ সালে তিনি কলকাতা বেথুন কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন এবং সে বছরই প্রধান শিক্ষক হিসেবে চট্টগ্রামের অপর্ণাচরণ বালিকা বিদ্যালয়ে যোগ দেন।
তিনি আরো বলেন, ছাত্রজীবন থেকে প্রীতিলতা বিপ্লবী সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ঢাকার বিপ্লবী দল ‘দীপালী সংঘ’ এবং কলকাতার ‘ছাত্রী সংঘ’র সক্রিয় কর্মী ছিলেন প্রীতিলতা। ১৯৩০ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখলের সময় প্রীতিলতা বেথুন কলেজের মেয়েদের মধ্যে একটি গোপন বিপ্লবী দল গড়ে তোলেন। সূর্যসেনসহ অন্যান্য বিপ্লবীদের সাথে প্রীতিলতার নিয়মিত যোগাযোগ হতো। ঝাঁসির রানীর দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ অসীম সাহসী প্রীতিলতা সূর্যসেনের নির্দেশে ১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে কয়েকজন বিপ্লবী সহযোদ্ধাসহ পূর্ণ সামরিক বেশে চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে অবস্থিত তৎকালীন ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণে যান। এই আক্রমণ সফল হলেও এক ইংরেজের গুলিতে আহত হন প্রীতিলতা। তাই শত্রুর হাতে ধরা পড়ার আগে নিজের পোশাকের ভেতর লুকিয়ে রাখা মারাত্মক বিষ পটাশিয়াম সায়ানাইড মুখে ঢেলে আত্মাহুতি দেন নিজেকে। প্রীতিলতার এ আত্মদান যুগ যুগ ধরে দেশপ্রেম আর সাহসিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে।
লায়ন সুজিত দাশ অপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন এম লোকমান হাকিম, মোহাম্মদ কালিম শেখ, আলমগীর হোসেন বাবুল, মোহাম্মদ আক্কাস মিয়া, বিপ্লব দে লালু, শিউলী আকতার, মোহাম্মদ হোসেন, সুজিত চৌধুরী মিন্টু প্রমুখ। এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় কলেজিয়েট স্কুলে প্রীতিলতা স্মরণে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিডা এন্ট্রিপ্রিনিয়র এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সভা
পরবর্তী নিবন্ধদুর্নীতি ও মাদকের প্রশ্রয়দাতাদের বিচার দাবি