প্রাণবন্ত আড্ডা মানুষকে এগিয়ে রাখার পাশাপাশি শরীর ও মনকে সতেজ রাখে। মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ ও মায়াবী বন্ধনকে সুদৃঢ় করে। সম্পর্ক মজবুত হয়। জ্ঞানের প্রসারতা বাড়ায়। জীবনকে আলোকিত করে। সুগন্ধ ছড়ায়। মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা শ্রদ্ধা মূল্যবোধ জাগ্রত করে। মনের বাগানে প্রতিনিয়ত সুন্দরের চাষ হয়, অসুন্দর সব তলিয়ে যায়। প্রতিটি সুস্থ মানুষ আড্ডা থেকে ভালো কিছু আশা করে। আসলে সুন্দর কথোপকথনের জন্য প্রয়োজন সুন্দর মনের মানুষ। আগাগোড়া সুন্দর মানুষগুলোর কারণেই পৃথিবীটা এত সুন্দর। ভালোবাসা তাদের হাতে পরিপূর্ণতা পায়। আবার সব আড্ডায় যে সুন্দরের চর্চা হয় তা কিন্তু নয়। পরিতাপের বিষয় হলো, একশ্রেণির মানুষ অন্যের ত্রুটিবিচ্যুতি নিয়ে সর্বক্ষণ পরচর্চা ও পরনিন্দায় লিপ্ত থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। নিজের কষ্টে অর্জিত অর্থ ও মূল্যবান সময় ব্যয় করে দাওয়াত দিয়ে আড্ডার আসর জমায়। পরের ভুলভ্রান্তিগুলো নানা মাল মসলা দিয়ে উপস্থাপন করেন যাতে অন্যরাও গোগ্রাসে গিলতে পারে। আমরা একটা কথা বেমালুম ভুলে যাই যে, কোনো মানুষই ভুলের উর্ধ্বে নয়। নিজের ভুল কখনও আমাদের চোখে পড়ে না। অন্যকে নিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে তার কৃতকর্মের নিন্দা করতে গিয়ে নিজেকে ফেরেস্তা ভেবে বসি। যাদের নিয়ে এতো সমালোচনা তারাও যে অন্যদিকে আপনাকে নিয়ে সমালোচনা করছে না তার নিশ্চয়তা কী? কী দরকার, নিজের খেয়ে অন্যের পেছনে লাগার। সমালোচনা করা যায় তবে সেই সমালোচনার বস্তুনিষ্ঠতা থাকা চাই। জীবন তো একটাই। এই ছোট্ট জীবনটাকে এতটা কঠিন করে লাভ কী? চাইলেই এই অসুস্থ ভাবনাগুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারি। সুন্দর সুস্থ মনে ভালো কাজ দিয়ে জীবনটাকে সাজাতে পারি। চাইলেই পারি মানুষে মানুষে ভালোবাসার সেতু রচনা করতে। ভালো ব্যবহার ও ভালো কাজের জন্যে মানুষ মানুষকে আজীবন সম্মানের সাথে মনে রাখে।