চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসীদের টার্গেট করে ডাকাতচক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত শনিবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে রোববার (১৬ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত নগরীতে টানা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন মো. ইমরান হাসান, মো. রুবেল, মো. শফি ওরফে মিজান, জাহাঙ্গীর আলম সোহাগ, মোয়াজ্জেম হোসেন, ইয়াছিন আরাফাত মিনার, মো. জমির, মো. সৈকত, হাবিবুল কিবরিয়া ওরফে আরমান, কিল্টন দে ও কায়সার হামিদ।
র্যাব–৭, চট্টগ্রামের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মো. নূরুল আবছার জানান, দুষ্কৃতকারীরা নগরীর আগ্রাবাদ থেকে একটি প্রাইভেটকারে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের দিকে অবস্থান করছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত এ এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ অভিযানে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছিনতাই চক্রে ১০ থেকে ১২ জন থাকে বলে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। এদের মধ্যে ৩ থেকে ৪ জন বিমানবন্দরে অবস্থান করে এবং বাকী সদস্যরা বাইরে অপেক্ষায় থাকতো। বিমানবন্দরে থাকা সদস্যরা বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীদের প্রথমে টার্গেট করে। প্রবাসীরা যখন বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে গাড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা দেয় তখন বিমানবন্দরে থাকা সদস্যদের তথ্য অনুযায়ী বাইরে অপেক্ষারত ছিনতাই চক্রের অন্যান্য সদস্যরা পথে প্রবাসীদের দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে লাগেজ সহ সর্বস্ব কেড়ে নেয়। এছাড়া তারা প্রবাসী ব্যক্তিদের পাসপোর্ট ছিনিয়ে নিয়ে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার চক্রের সদস্যরা ছিনতাই ছাড়াও পটিয়া, বোয়ালখালী ও বাঁশখালী রুটে সিএনজি টেক্সিকে টার্গেট করতো। তাদের এক গ্রুপ সিএনজি টার্গেট করতো এবং অন্য গ্রুপ যাত্রী সেজে সেই সিএনজিতে উঠে মাঝপথে নির্জন স্থানে তারা সিএনজি চালককে আহত করে ছিনতাই করে চলে যায়। পরবর্তীতে সিএনজি টেক্সিগুলো তাদের গোপন একটি স্থানে নিয়ে নাম্বার প্লেট, চেসিস নাম্বার ও সিএনজির রং পরিবর্তন করে ফেলে। পরে কাভার্ডভ্যানের মাধ্যমে চট্টগ্রামের বাইরে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা এবং বগুড়ায় এক থেকে দেড় লাখ টাকায় পাচার করতো। যখন সিএনজি টেক্সির চাহিদা থাকতো না তারা পুনরায় বিমানবন্দর এলাকায় অবস্থান করে প্রবাসীদের লাগেজ ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াতো।
র্যাব জানায়, চক্রের দলনেতা ইমরান। এছাড়া তারা রমজান মাস এবং ঈদ উপলক্ষে চট্টগ্রামের জঙ্গল সলিমপুরসহ বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসের যাত্রী এবং ড্রাইভারদেরকে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা ছিনতাইয়ে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তার এই ১১ জনের মধ্যে একাধিক জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে।












