পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানি অধিকাংশ নেমে গেছে। তবে এখনো ২০ শতাংশ এলাকা তথা নিম্নাঞ্চলের হাজারো বসতবাড়ি বানের পানিতে তলিয়ে রয়েছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। দুর্ভোগের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন চকরিয়া, পেকুয়া, সাতকানিয়া ও চন্দনাইশের বন্যা উপদ্রুত এলাকার কয়েক লাখ মানুষ।
চকরিয়া প্রতিনিধি জানান, বানের পানি নেমে গেলেও গুঁড়ি বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। অধিকাংশ বাড়ির চুলোয় আগুনও দেওয়া যায়নি এখনও। ত্রাণ নির্ভর হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। কোথাও ত্রাণ দেওয়ার খবর শুনলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।
স্মরণকালের ভয়াবহ এই বন্যার পর গতকাল শুক্রবার সকালে বন্যা কবলিত চকরিয়া ও পেকুয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এমপি। এ সময় সাথে ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম এমপি, কক্সবাজার–১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম, কক্সবাজার–২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান প্রমুখ।
চকরিয়ার ইউএনও জেপি দেওয়ান জানান, মন্ত্রী গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চকরিয়ার কাকারায় মাতামুহুরী নদীতীরের তাণ্ডবচিত্র প্রত্যক্ষ করেন। এরপর কাকারা, সাহারবিল ও কোনাখালীতে ২৭৫০ পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। এরপর পেকুয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২০৫০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ তুলে দেন বলে নিশ্চিত করেন পেকুয়ার ইউএনও পূর্বিতা চাকমা।
সাতকানিয়া প্রতিনিধি জানান, গতকাল বিকালে সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া এলাকায় বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
বন্যা কবলিত চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের জন্য ইতোমধ্যে ৭০ লাখ টাকা, ৭০০ মেট্রিক টন চাউল, ২১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ২০০০ বান্ডিল ঢেউটিন ও ৬০ লাখ টাকা গৃহ নির্মাণ মজুরি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সাতকানিয়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্যাপ্টেন এ. বি. তাজুল ইসলাম (অব.) এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস।
সহকারী কমিশনা (ভূমি) আরাফাত সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের, কেঁওচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ওচমান আলী, ধর্মপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন টিপু, কালিয়াইশ ইউপি চেয়ারম্যান হাফেজ আহমদ, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মুহাম্মদ জসীম উদ্দিন, সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
চন্দনাইশ প্রতিনিধি জানান, চন্দনাইশে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এমপি। এ উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার দোহাজারী পৌরসভায় আয়োজিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, ক্যাপ্টেন এবিএম তাজুল ইসলাম এমপি, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, দক্ষিণ জেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জিমরান মোহাম্মদ সায়েক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ চৌধুরী জুনু, ওসি মো. আনোয়ার হোসেন, দোহাজারী পৌরসভার মেয়র মো. লোকমান হাকিম, ধোপাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদুল আলীম, বরকল ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহিম চৌধুরী, হাশিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান এড. খোরশেদ বিন ইসহাক প্রমুখ।