চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ভেতর পাহাড়ের পাদদেশ ও টিলার ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে শক্তিশালী একটি মাটিখেকোচক্রের। চক্রটির সদস্যরা সূর্যাস্তের পর সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত বাড়ার সাথে সাথে তাদের পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড শুরু করে দেয়। এর পর ভোররাত পর্যন্ত চলে এক্সেভেটর দিয়ে টিলা কেটে ডাম্পার ভর্তি করে মাটি লুটের মহোৎসবের।
গত এক সপ্তাহ ধরেই পরিবেশবিধ্বংসী এই কর্মকাণ্ড চলছে বনবিভাগ বা প্রশাসনের কোন ধরনের বাধা ছাড়াই। এমনকি যে স্থান থেকে টিলা কেটে মাটি লুট করা হচ্ছে এর অদূরেই বিদ্যমান রয়েছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জাধীন হারবাং বনবিট কার্যালয়। চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের উত্তর হারবাংস্থ পশ্চিম বৃন্দাবনখিল এলাকায় চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর এই পরিবেশবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড চলছে। অভিযোগ ওঠেছে– বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই পরিবেশবিধ্বংসী এই কর্মকাণ্ড সংঘটিত করছে মাটিখেকোচক্রটি। সরজমিন দেখা গেছে– চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যটি হচ্ছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। হাতি, বানর, শূকরসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর বসবাস এখানে। কিন্তু স্থানীয় শক্তিশালী মাটিখেকোচক্রটি সেই বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ভেতর থেকে পাহাড়ের টিলা ও পাদদেশ এঙেভেটর দিকে কেটে সাবাড়ের পর সেই মাটি অন্যত্র পাচার করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমি মাত্র কয়েকদিন আগে রেঞ্জে যোগদান করেছি। তাই এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছি না অভয়ারণ্যের কোথাও পাহাড়ের টিলা বা পাদদেশ কাটা হচ্ছে কী–না। তবে আমি খোঁজ নিচ্ছি।’ তবে মাটিখেকোচক্রের সঙ্গে কোন ধরণের সখ্যতাও আমাদের নেই–যোগ করেন রেঞ্জ কর্মকর্তা।
এদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের সহকারি বনসংরক্ষক (এসিএফ) নূর জাহান দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ভেতর যদি পরিবেশবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড কোন দুষ্টুচক্র সংঘটিত করে, টিলা বা পাদদেশ কেটে মাটি লুট করে থাকে, তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসাথে বন্যপ্রাণী বিট কর্মকর্তাকে এখনই নির্দেশ দিচ্ছি বিষয়টি দ্রুততার সঙ্গে দেখার জন্য।