প্রতারণার কৌশল ছিল ভিন্নরকম

গ্রেপ্তার ৪, ওমানি মুদ্রা উদ্ধার

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৫ মার্চ, ২০২৫ at ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ

রাতারাতি বড়লোক হওয়ার লোভ করেছিলেন একজন। অপরদিকে সংঘবদ্ধ একটি চক্রের প্রতারণার কৌশল ছিল ভিন্নরকম। চক্রটি লোভে পড়া এক দোকান কর্মচারীকে ওমানের খুচরা কয়েকটি নোটকে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাজিয়ে হাতিয়ে নেন দেড় লক্ষাধিক টাকা। ঘটনা পুলিশ পর্যন্ত গড়ানোর পর পাঁচলাইশ মডেল থানা পুলিশ প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছ থেকে ওমানের খুচরা টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির নামে প্রতারণা করা বেশ কিছু টাকা উদ্ধার করেছে।

পুলিশ বলেছে, নগরীর সদরঘাট থানাধীন পূর্ব মাদারবাড়ির গাজী ডিপো বাই লেইনের ৫০৮ নম্বর বাসার শফিউল আজম খোকনের পুত্র মেজবাউল আজম সানমার ওশান সিটি শপিং সেন্টারের ৪র্থ তলায় অপো শোরুমে সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তিনি শোরুমের ১ লাখ ৫ হাজার টাকা নিয়ে জিইসি মোড়ের ব্যাংক এশিয়াতে জমা দেওয়ার জন্য যাচ্ছিলেন। তিনি জিইসি মোড় সংলগ্ন এলিট পেইন্টের অফিসের সামনে পৌঁছলে অজ্ঞাতনামা এক সিএনজি চালক তাকে ডাক দেন। তিনি কাছে গেলে চালক তার হাতে থাকা একটি নোট দেখিয়ে বলেন, এটা ডলার। এটা কোথায় ভাঙানো যাবে তা মেজবাউলের কাছে জানতে চান। মেজবাউল তাকে আগ্রাবাদ যাওয়ার পরামর্শ দেন। এ সময় আরো ৪/৫ জন লোক ওখানে উপস্থিত হয়ে সিএনজি টেক্সি ভাড়া নেওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে ওই সিএনজি চালক মেজবাউলকে শুনিয়ে ওই লোকদের ডলার ভাঙানো এবং বিক্রয়ের কথা বলেন। অজ্ঞাতনামা উক্ত ৪/৫ লোক মেজবাউলকে শুনিয়ে বলেন, বিদেশি ডলারগুলো ওমানের। ওমানের উক্ত ১০০ বাইসা সমান বাংলাদেশি ৩০ হাজার টাকা। তারা মেজবাউলকে অর্ধেক দামে ডলারগুলো কিনে নেওয়ার পরামর্শ দেন। আলোচনার এক পর্যায়ে মেজবাউল সিএনজি চালকের কাছ থেকে ১১টি ১০০ টাকার ওমানি বাইসা কিনে নেন। প্রতিটার দাম ১৫ হাজার টাকা করে ১১টির মূল্য ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। তখন মেজবাউল বলেন, তার কাছে মোট ১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা আছে। সিএনজি চালক বলেন, যা আছে তা দিলেই হবে।

মেজবাউল ১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা দেওয়ার পর সিএনজি চালক তাকে ১১টি ১০০ পয়সার ওমানি বাইসা দিয়ে দ্রুত চলে যান। পরে মেজবাউল একজন আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারেন, ওমানের ১০০ বাইসার মান বাংলাদেশি মাত্র ১৫ টাকা।

ঘটনার ব্যাপারে পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে প্রতারকদের চিহ্নিত করেন। পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার খুলশী থানাধীন শাহজাহান মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন (৪১), মোহাম্মদ জাহান হোসেন সুমন (৩৫), মোহাম্মদ এয়ার হোসেন রানা (৪২) ও মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে ১৮১টি ওমানি পয়সা ও প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া ২৯ হাজার টাকা উদ্ধার করে। অভিযানকালে প্রতারণার সময় ব্যবহৃত সিএনজি টেঙিও জব্দ করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্কুলে ভর্তিতে ৫ শতাংশ কোটা বাতিল, থাকবে সংরক্ষিত আসন
পরবর্তী নিবন্ধবিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক্স-টাইলসসহ ৯৩ লট পণ্য নিলামে