পেকুয়ায় সমলয়ের ৫০ একর ধান চাষের উদ্বোধন

ধান চাষে খরচ ও সময় বাঁচিয়ে ফলন বাড়াবে সমলয় পদ্ধতি

দেলওয়ার হোসাইন, পেকুয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫ at ১০:১৮ অপরাহ্ণ

ধান চাষে খরচ ও সময় বাঁচিয়ে ফলন বাড়াবে সমলয় পদ্ধতি। প্রচলিত পদ্ধতি বাদ দিয়ে একই জাতের বীজ দিয়ে ট্রেতে বীজতলা তৈরি, রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপণ এবং কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে কর্তন করার পদ্ধতিই হচ্ছে ‘সমলয়’।

ধান চাষে শ্রমিক সংকট নিরসন, উৎপাদনে অতিরিক্ত খরচ ও সময় বাঁচায় এ পদ্ধতি। পদ্ধতিটি নতুন হলেও দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে।

কক্সবাজারের পেকুয়ায় ৫০ একর জমিতে বোরো সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদের উদ্বোধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় উপজেলার শিলখালী হাজিরঘোনা ব্লকে সমলয়ের ৫০ একর ধান চাষের উদ্বোধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায়‌ সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ রাসেল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী। এতে সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা, সকল উপ-সহকারী কৃষি অফিসারবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকবৃন্দ এবং কৃষক কৃষাণীরা উপস্থিত ছিলেন।

পেকুয়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষি পুর্নবাসন কর্মসূচির আওতায় পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের হাজিরঘোনা গ্রামে ৫০ একর জমিতে বোরো সমলয় পদ্ধতিতে ব্রি ৭৪ ধানের চাষাবাদের উদ্বোধন করা হয়।

জমির উপরিভাগের মাটির সাথে জৈব সার সংমিশ্রণে প্লাস্টিকের ট্রেতে ধান বীজ বপন করে ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে এই বীজ চারা রোপণের জন্য উপযোগী হয়ে ওঠে। এতে করে বাড়তি সারের প্রয়োজন হয় না। ট্রেতে চারা উৎপাদনে জমির পরিমাণ কম লাগে।

রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন দিয়ে চারা একই গভীরতায় সমানভাবে লাগানো যায়। ফলে ফলনও বৃদ্ধি পায়। একসঙ্গে চারা রোপণ করায় ধান একসঙ্গে পাকে এবং তা একসঙ্গে কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে কর্তন করায় কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারে।

এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ রাসেল বলেন, পদ্ধতিটি কৃষকের জন্য নতুন হলেও উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এ ব্যাপারে কৃষদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর তাদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এতে শ্রমিক সংকট নিরসন হওয়ার পাশাপাশি সময় ও খরচ এবং রোগবালাইও কম হয়।

তিনি বলেন, শুরুতে এই চাষে কৃষকদের আগ্রহ কম থাকলেও পরবর্তীতে সমলয় পদ্ধতি নিয়ে তাদের সাথে বিস্তর আলোচনার পর তারা আগ্রহী হয়। এখন স্থানীয় কৃষকদের মাঝে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে।

এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। কৃষি কাজে যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি করতে কৃষকদের মাঝে সচেতনতা তৈরি করে এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহী করতে পারলে কৃষি খাতকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে মন্দিরে চুরি, প্রধান আসামি গ্রেফতার
পরবর্তী নিবন্ধবান্দরবানে স্ত্রীকে হত্যার দায়ের স্বামীর মৃত্যুদণ্ড