চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে সরবরাহ বাড়ার কারণে কমছে পেঁয়াজের দাম। গত তিনদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে দাম কমেছে ১০ টাকা পর্যন্ত। চাক্তাই–খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা বলছেন, দাম না কমলে সরকারে পক্ষ থেকে আমদানির অনুমতি দিতে পারে এমন ঘোষণার পর কৃষকেরা আতঙ্কিত হয়ে পেঁয়াজ দাম কমিয়ে দিয়েছেন। বাজারে এখন যে পরিমাণ দেশি পেঁয়াজ আছে, আমদানির অনুমতি না দিলেও সমস্যা হবে না। এরমধ্যে কয়েকদিন পরে আবার কৃষকের ঘরে নতুন পেঁয়াজ উঠবে। তাই দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই।
গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে বর্তমানে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। গত এক সপ্তাহে আগে এসব পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। বর্তর্মানে এসব পেঁয়াজ আসছে ফরিদপুর, কুষ্টিয়া ও রাজবাড়ি থেকে।
পেঁয়াজের আড়তদাররা বলছেন, চাক্তাই খাতুনগঞ্জের আড়তে ব্যবসায়ীরা কমিশনের ভিত্তিতে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। আমদানিকারকরা যে দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বলেন, আড়তদাররা সেই দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। আড়তদারদের পক্ষে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা সম্ভব নয়। কিন্তু আমাদের দেশে পেঁয়াজের দরবৃদ্ধির সাথে সাথে প্রশাসনের লোকজন আড়তে অভিযান পরিচালনা করে। এতে আতঙ্ক তৈরি হয়। অথচ আড়তদাররা পেঁয়াজ আমদানি করেন না।
জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি–১ (তাহেরপুরী), বারি–২ (রবি মৌসুম), বারি–৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারের ওপর খুব বড় প্রভাব ফেলে।
চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম বলেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে গেছে। দেশীয় পেঁয়াজের উৎপাদনও ভালো হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ইতোমধ্যে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ পাইকারী বাজারে প্রবেশ করেছে। এছাড়া সামনে আবার কৃষকের হাতে নতুন পেঁয়াজ আসবে।
খাতুনগঞ্জের কয়েকজন আড়তদার বলেন, খাতুনগঞ্জে যে পরিমাণ পেঁয়াজ আসছে, সে হিসেবে ক্রেতা নেই। সব ব্যবসায়ীর দোকান গুদাম পেঁয়াজে ভর্তি। তাই দামেও কমে আসছে। এছাড়া আবার দাম না কমলেও সরকারের দায়িত্বশীল কর্তারা আমদানির অনুমতি দিবেন, এমন হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছেন, সব মিলিয়ে বাজার কমতির দিকে ভোক্তারা বলছেন, পেঁয়াজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কারসাজি নতুন কিছু নয়। ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করেন। দেশে পেঁয়াজের উচ্চ ফলনের দাম সেভাবে কমেনি। এখন সরকার যে মাত্র আমদানির ইঙ্গিত দিয়েছে, এখন তড়িঘড়ি করে দাম কমিয়ে দিচ্ছেন।












