চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) ও ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরির কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। গতকাল সকালে পরিদর্শন কার্যক্রম শেষে হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, জাতীয় মহিলা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ও ডিএনএ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবেদা আক্তার, ডিএনএ অধিদপ্তরের পরিচালক যুগ্ম সচিব সুফিয়া নাজিম, চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহানা আক্তার ও হাসপাতালের উপ–পরিচালক ডা. অংসুই প্রু মারমা প্রমূখ।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, সরকার নারী ও শিশুর উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন প্রকল্প, আইন ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। নারী শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সরকারের সাথে উন্নয়ন সহযোগী, জনপ্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটি ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন সংশোধন ২০২০ আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও ডিএনএ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করায় দ্রুত অপরাধী শনাক্ত এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত হচ্ছে। পূর্বে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৪৫ থাকলেও সরকার ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে ১০৬টি করেছে। বহুমুখী এসব কার্যক্রমের ফলে নারী ও শিশু নির্যাতন কমেছে। প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুর ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ৭টি বিভাগীয় পর্যায়ে ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিভাগীয় ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রেগ্রাম প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় ১৪টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ৪৭টি জেলা সদর হাসপাতাল এবং ২০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙেসহ মোট ৬৭টি ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেল স্থাপন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চমেক হাসপাতালের ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরির মাধ্যমে বর্তমানে ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। পরবর্তীতে টেস্টের জন্য এ নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়ে থাকে। এতে করে ডিএনএ রিপোর্ট পেতে দীর্ঘসূত্রিতায় পড়তে হয়। সভায় চমেক হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ ল্যাব স্থাপনের প্রস্তাব দেয়া হয়। একই সাথে ওসিসির সুযোগ–সুবিধা আরো বাড়ানোর দাবি জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, এখানে পূর্ণাঙ্গ একটি ডিএনএ ল্যাব স্থাপন হলে এখানেই ডিএনএ টেস্ট করা যাবে। আর ঢাকায় পাঠানোর প্রয়োজন হবে না। এটি হলে সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি চট্টগ্রামের মানুষ অনেক জটিলতা থেকে নিস্তার পাবেন। একই সাথে ওসিসির সুযোগ–সুবিধা আরো বাড়ানো প্রয়োজন।
এসব কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনে আলাদা ভবনের প্রস্তাবনা দেন হাসপাতাল পরিচালক। সভায় উঠে আসা প্রস্তাবনা ও দাবির বিষয়ে বিবেচনার আশ্বাস দেন প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা।