বাঁশখালীর মেয়ে তাহুরা সুলতানা রেখা পায়ে হেঁটে বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ভ্রমণ শেষ করলেন বৃহস্পতিবার রাতে। গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টের মাধ্যমে জানান হেঁটে দেশভ্রমণের অনুভূতির কথা। তাহুরা সুলতানা রেখা ২০২৪ সালের ২৯ নভেম্বর সকাল ৬টায় টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জিরো পয়েন্ট থেকে যাত্রা শুরু করেন। হাঁটার মাঝে বেশ কয়েকদিন নেপাল ভ্রমণও করেছিলেন। অবশেষে ১ হাজার ১ কিলোমিটার সড়কপথ পাড়ি দিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টে এসে শেষ করেন টেকনাফ টু তেঁতুলিয়া ভ্রমণ। এর মধ্যে তিনি ২৬ দিন হেঁটেছেন। শুরুটা একা করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের কল্যাণে পথে পথে পরিচিত–অপরিচিত অনেকে তাকে সহযোগিতা করেছেন এবং সাথেও ছিলেন। চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের রশিদ আহমেদ ও তৈয়বা খাতুনের মেয়ে তাহুরা সুলতানা রেখা। চার ভাই, এক বোনের মধ্যে সবার ছোট। বাঁশখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (বর্তমানে সরকারি) থেকে এসএসসি পাস করে চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন।
ভ্রমণ ও হেঁটে দেশ দেখার ব্যাপারে রেখা বলেন, পরিবারে আমি সবার ছোট। ছোটকাল থেকেই ঘোরাঘুরি এবং চ্যালেঞ্জিং কোনো বিষয় গ্রহণ করতে আমার ভালো লাগে। এসব কারণে হেঁটে দেশ ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়ে যাত্রা শুরু করি। আমার পুরো জার্নিতে পুরো বাংলাদেশের ১ হাজার কিলোমিটার হাইকিং, সঙ্গে যমুনা নদী সাঁতরানো, হিমালয়ের তিনটা পাহাড়ের যে অর্জনগুলো ছিল–এই জায়গায় শেষ হলো। জার্নিটা শেষ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। হাঁটা শেষ করে নিজের কাছেই অবাক লাগছে, পুরো দেশটা হেঁটে ফেললাম!
তিনি বলেন, হাঁটতে গিয়ে যেখানে বিরতি নিয়েছি সেখানে মানুষের ভালোবাসা আর স্বতঃস্ফূর্ত সাড়ায় আমি অভিভূত। তিনি বলেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটা জরুরি। হেঁটে আমার প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি মানুষকে হাঁটায় উদ্বুদ্ধ করতেই আমার এই যাত্রা। আমার ‘জুম ওয়াইল্ড’ নামে ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে ট্রাভেলিংয়ের প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী নিয়ে দোকান আছে। সেখান থেকে অর্জিত টাকা জমিয়ে এ জার্নি করেছি।
বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টের জিরোফলকে পৌঁছে তাহুরা সুলতানা রেখা বলেন, ১ হাজার কিলোমিটার মাইলফলক শেষ হলো। তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টে আমি খুব লেটে এসেছি। আমার সন্ধ্যা ৫টা বা ৬টা হয়ে যায়। সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও আমাকে এখানে আসতে দেওয়া হয়েছে। এটার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।
এ দীর্ঘ জার্নিতে যারা পাশে ছিলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমার এ জার্নির সঙ্গে এই মুহূর্তে যারা জড়িত আছে তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সেই সঙ্গে যারা আমার এ জার্নির সঙ্গে ছিলেন সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সবার প্রতি ভালোবাসা।