ছেলে বউয়ের সঙ্গে আপন ভাতিজাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেছিলেন ফুফু নুর আয়েশা। এরজের ধরে ভাতিজা শেখ কামাল ও আপন ছেলের স্ত্রী কুসুম আকতার হত্যা করেছিল নুর আয়েশাকে।
পরকীয়ার বলি হওয়ার ১০ বছর পর দেবর-ভাবিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৩ মে) চট্টগ্রাম আদালতের চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রোজিনা খান এ দণ্ডাদেশ দেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মোকাররম হোসেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত দেবর ভাবি হলেন, রাউজানের উনসত্তর পাড়া গ্রামের কাজী বাড়ির মোহাম্মদ হানিফের ছেলে নিহত নুর আয়েশার ভাতিজা শেখ কামাল (৩৪) এবং রাউজানের পাহাড়তলী ইউনিয়নের শহিদুল্লাহ কাজীর বাড়িতে নুর আয়েশার আপন ছেলে প্রবাসী মুবিনের স্ত্রী কুসুম আকতার (৩৩)।
আদালত সূত্র জানায়, মামলার শুরু থেকে নিহতের ভাতিজা শেখ কামাল পলাতক ছিলেন। আর কুসুম আক্তার শুরুতে আদালতে হাজির থাকলেও রায়ের দিন অনুপস্থিত ছিলেন। সূত্র মতে, নুর আয়েশার ছেলে মুবিন প্রবাসে ছিলেন। ফুফুর বাড়ির দেখবাল করার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন ভাতিজা শেখ কামাল। সেসময় তার ভাতিজা শেখ কামাল পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন নুর আয়েশার পুত্রবধূ কুসুম আকতারের সঙ্গে।
একদিন ঘরে ফিরে ভাতিজা ও পুত্রবধূকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান ফুফু নুর আয়েশা। পরে দেবর-ভাবি মিলে তাকে গলায় চাপ দিয়ে হত্যা করেন। ঘটনার দীর্ঘ তদন্ত ও শুনানি শেষে আদালত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় উভয়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের শহিদুল্লাহ কাজীর বাড়িতে গত ২০১৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার খুনের শিকার হন নুর আয়েশা। স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে প্রচার করে ২৩ সেপ্টেম্বর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। প্রবাসী স্বামীর কাছে স্বীকার করার পর গ্রাম্য সালিশী বৈঠক ডাকেন নিহতের প্রবাসী ছেলে মুবিন।
পরে সেখানে সবার সামনে কুসুম আকতার খুনের বিষয়টি স্বীকার করেন। পরবর্তীতে ২২ অক্টোবর শেখ কামাল ও এক অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাউজান থানায় মামলা রেকর্ড হয়। পরদিন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন কুসুম। এরপর আদালতের নির্দেশে করব থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়।