পিতা পুত্র সম্পর্ক হতে হবে বন্ধুত্বপূর্ণ। তাদের সুখ দুঃখগুলো যেন একে অপরের সাথে ভাগাভাগি করতে পারে। পিতা হবেন অভিভাবক, শিক্ষক, নেতা, বন্ধু এসব কিছুর সমন্বয়ে। আর পুত্রকেও আদর শাসন দুটোই সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে মেনে চলতে হবে। মার্সেল রুফো যেমন ব্যাখ্যা করেছেন, একটি শিশু তার পিতাকে আদর্শ করে গড়ে উঠে। ছোট ছেলের জন্য, তার বাবাই প্রথম রোল মডেল যাকে সে চিনতে পারে। পুত্রকে শোনা, রক্ষা করা, উৎসাহিত করা এই সবই বাচ্চাদের আত্মবিশ্বাসী বোধ করতে দেয় এবং তাদের বাবাকে মিত্র হিসাবে বিবেচনা করে জীবনে এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়। প্রফেসর মার্সেল রুফোর মতে, বাবা ও ছেলের মধ্যে সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতা খুবই স্বাভাবিক। একটি ছেলে তার পিতার প্রতি যে প্রশংসা করে তা কখনই তার শক্তি এবং দক্ষতাকে তার মতো হওয়ার জন্য উপযুক্ত করার আকাঙ্ক্ষা থেকে মুক্ত হয় না বরং তাকেও বাবার মতো শক্তিধর হতে সাহায্য করে। বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত, ছোট ছেলেরা তাদের বাবাকে নায়ক মনে করে। তারপরে বয়ঃসন্ধিকাল এই শান্ত সময়ের সমাপ্তি চিহ্নিত করে। যুবককে তার নিজের ধারণা তৈরি করতে দেয় যে একজন মানুষ, সে যেমন হতে চায়। পিতারা তখন কিছুটা বাদ বোধ করতে পারে, এমনকি তাদের কাজের সমালোচনাও করতে পারে। পুত্র পিতাকে অনুসরণ করে ‘একদিন আমি তোমার চেয়ে শক্তিশালী এবং ভাল হব’। সাথে সাথে পুত্রকে বুঝাতে হবে সামাজিক জীবন ও মানবিক জীবন সম্পর্কে। আদর্শ মানুষ হয়ে গড়ে উঠার জন্য পিতার ভূমিকা অপরিসীম। আনন্দ, হাসি, ঠাট্টা কিংবা গান, কৌতুক এসব সম্পর্কে প্রাণ সঞ্চার ঘটায়। আদব শিক্ষার চেয়ে বড় শিক্ষা হতে পারে না। সম্মান শ্রদ্ধাবোধ পিতার প্রতি যেমন পুত্রের অবধারিত তেমনি অন্যান্যদের সাথেও রক্ষা করা জরুরি। সকল শিক্ষা পুত্র পায় পিতা হতে। অতিরিক্ত শাসনের ফলে হিতে বিপরীত হতে পারে তাই সতর্ক থাকতে হবে পিতাকে। মধ্যম পন্থা অনুসরণ করতে হয়। পিতা পুত্রের এই সম্পর্ক পিতার শেষ শয্যা অবধি অটুট থাকে। ধর্মীয় শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ধর্মীয় আচার রীতি তাকে অনুগত হতে শিক্ষা দেয় এবং পারিবারিকভাবে তার দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধে উজ্জীবিত করে। তাইতো পিতা পুত্রের সম্পর্ক মর্যাদা ও বন্ধুত্ব সুলভে বিদ্যমান।