পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য ছোট বড় পাহাড়ে হরেক রকমের ফল ফলাদি জন্মে। কিছু ফল প্রাকৃতিকভাবে পাহাড়ে উৎপাদিত হয়। আবার কিছু কিছু ফল স্থানীয়রা চাষাবাদ করে উৎপাদন করেন। অনেক রকমের ফলের মধ্যে জাম্বুরা প্রায় সবসময় পাহাড়ে পাওয়া যায়। তবে রাঙ্গামাটি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় জাম্বুরা বেশি হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। বিশেষ করে কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, নানিয়ারচর, বরকল, বাঘাইছড়ি, লংগদু ইত্যাদি উপজেলার পাহাড়ে বিপুল সংখ্যক জাম্বুরা গাছ রয়েছে । আর এসব জাম্বুরা গাছে প্রতি বছর অসংখ্যক জাম্বুরা ধরে। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে পাহাড়ে জাম্বুরার বাম্পার ফলন হলেও উৎপাদনকারিরা তেমন দাম পাননা বলে জানা গেছে। জুরাছড়ি উপজেলার চাষী আনন্দ চাকমা বলেন, আমাদের বাগানের জাম্বুরা নিতে অনেক ব্যবসায়ী আসেন। আগাম টাকাও দিয়ে যান। তবে টাকার পরিমাণ অনেক কম। কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ টাকায়ও জাম্বুরা নিকে নিয়ে যায় ব্যাপারিরা। আর সেই জাম্বুরা শহরে ৫০/৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়।
রাঙ্গামাটির ফিশারী ঘাটে দেখা গেছে বড়বড় নৌকা ভর্তি করে ব্যবসায়ীরা পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জাম্বুরা নিয়ে আসছেন। রমজান আলী নামক একজন ব্যাপারির সাথে আমাদের প্রতিনিধির কথা হয়। পাহাড়ে অনেক কম দামে জাম্বুরা পাওয়া যায় স্বীকার করে তিনি বলেন, আসলে আমাদের পরিবহন খরচ বেশি পড়ে। তিনি বলেন দুর্গম পাহাড়ের বাগান থেকে জাম্বুরা সংগ্রহ করে সেগুলো বিভিন্নভাবে ঘাটে আনা হয়। ঘাটে নৌকা বোঝাই করতে হয়। সেই নৌকা রাঙ্গামাটি অথবা কাপ্তাই ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে লেবার দিয়ে জাম্বুরা আনলোড করে আবার ট্রাকে বোঝাই করতে হয়। সেই ট্রাক চট্টগ্রাম নিয়ে আসা এবং সেখানে আনলোড করা ইত্যাদি বিভিন্ন ধাপে ধাপে পরিবহন খরচ দিতে হয়। যে কারণে কেনার সময় কম দাম পড়ে আবার বিক্রির সময় দাম বেড়ে যায়। তবে সিজনে জাম্বুরা বিক্রি করে ভালোই মুনাফা হয় বলে তিনি জানান।