পাহাড়ের ঢালুতে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

মাহবুব পলাশ, মীরসরাই | রবিবার , ২৮ জুলাই, ২০২৪ at ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ

মীরসরাই উপজেলার অনেক স্থানে পাহাড় কাটার সাথে রীতিমতো বন রক্ষক বিভাগেই জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাই অনেকেই বলছে যেখানে রক্ষকই ভক্ষক সেখানে আর রক্ষা হবে কি করে।

উপজেলার সোনাপাহাড় বন বিট কর্মকর্তার কার্যালয়ের পার্শ্বেই একটি টিলা কেটে রীতিমতো পাকা ও কাঁচা ঘর নির্মান করছে কিছু স্থানীয় বাসিন্দা। এই বিষয়ে উক্ত বন বিট কার্যালয়ের কর্মকর্তা একরামুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন টিলা কাটা নিয়ে নিয়ে তিনি বাধা দিয়েছিলেন কিন্তু ওরা তাদের নিজের নামিয় টিলা বলে দাবি করে এবং বাধা শুনে নাই বলে জানান। কিন্তু নিজের নামীয় টিলা হলে ও কাটার সুযোগ নেই পরিবেশ ও বনবিভাগের অনুমতি ব্যতিরেকে এই বিষয়ে তিনি আইনগত কি উদ্যোগ নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি। এভাবেই উপজেলার অনেক স্থানে পাহাড়গুলোতেই ঝুকিপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সাধারন মানুষের বসবাস।

২০১৭ সালে পার্বত্য ট্রাজেডি ও ইতিপূর্বে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় অনেক মানুষের প্রাণহানির পর ও চট্টগ্রাম এবং পাশ্ববর্তি পাহাড়ি এলাকায় ঝুকিপূর্ণ অঞ্চলে মানুষের বসবাসের বিষয়ে নেই বিশেষ কোন উদ্যোগ। এবার ও আগাম বর্ষায় ইতিমধ্যে আগাম বর্ষন ও ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে কমেনি মানুষের পাহাড়ের ঢালুতে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস।

সরেজমিনে দেখা গেছে পাহাড়ি অঞ্চল মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের পাহাড়গুলোর ঝুঁকিপূর্ণ পাদদেশে ও ঢালুতে দিনে দিনে মানুষের বসবাস বিপদজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বিষয়ে প্রশাসনিক কোন উদ্যোগ বা কোন প্রকার প্রতিরোধক উদ্যোগ না থাকায় উল্টো যেন এমন ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস মেনেই নিচ্ছে সকলে। বিশেষ করে করেরহাট, দুর্গাপুর, খৈয়াছরা, জোরারগঞ্জ, ওয়াহেদপুর অঞ্চলে ঝুকিপূর্ণ বসবাস বাড়ছেই।

বারইয়াহাটখাগড়াছড়ি সড়কে ও কয়েকবার পাহাড় ধসে মারা গিয়েছিল কয়েকজন। মর্মান্তিক এইসব দুর্ঘটনার পর ও এখনো মীরসরাইয়ের কিছু অঞ্চলে পাহাড়ের ঢালুতে বসবাস করছে নানা পরিবার। মীরসরাইয়ের বিভিন্ন এলাকার সহস্রাধিক পরিবার পাহাড়ের ঝুকিপূর্ণ ঢালুতে বিপদজনকভাবে বসবাস করছে। সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণভাবে পাহাড়ের ঢালুতে বসবাস করতে দেখা যায় করেরহাট, পূর্ব দুর্গাপুর, সোনাপাহাড় ও খৈয়াছরা এলাকার কয়েকটি এলাকায়।

উপজেলা চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়নের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এলাকায় অনেক উপজাতিদের আদি বসবাস। কিছু বাঙালিকে ও এখন পাহাড়ি জনপদে বসবাস করতে দেখা যায়। তবে বিভিন্ন সময় ভয়াবহ দুর্যোগ দেখে আমরা খুবই আতংকিত হই । আমরা বার বার তাদের সতর্ক করে আসছি, কিন্তু পূনর্বাসনের ব্যবস্থা না থাকায় কঠোর উদ্যোগ নেয়া যাচ্ছে না। এরপর ও সাধারন মানুষের নিরাপত্তামূলক বাসস্থানের বিকল্প উদ্যোগ গ্রহন করবো।

এছাড়া উপজেলার পূর্ব দুর্গাপুর, মহামায়া লেক এলাকা, রায়পুর গ্রাম, খৈয়াছরা ও ওয়াহেদপুরে বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ বসতি এখনো রয়েছে বলে জানা যায়। বিশেষ করে সোনাপাহাড় এলাকায় বনবিভাগের স্থানীয় বনবিট অফিসের পাশেই দেখা গেছে পাহাড় কেটে ঘরবাড়ি নির্মান করছে দেদারসে।

এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, মীরসরাইয়ের সকল চেয়ারম্যানকে বর্ষার পূর্বে এই বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। এবার ও সবাইকে জানিয়ে দেয়া হবে। তবে জনপ্রতিনিধিগনের মাধ্যমে এই বিষয়ে স্থায়ী উদ্যোগ অথবা উচ্ছেদ অভিযান ও করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে নেই ফুটপাত
পরবর্তী নিবন্ধমাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি সূর্যগিরি আশ্রম শাখার ত্রাণ বিতরণ