সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করে বাংলাদেশের গ্রামকে শহরে রূপান্তরের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ‘আমার গ্রাম–আমার শহর: পাইলট গ্রাম উন্নয়ন’ প্রকল্পে সায় দিয়েছে সরকার। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৮০০ কোটি টাকার এ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয় বলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, বৈঠকে ১৮ হাজার ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১৫টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে সমন্বিত ও টেকসই পৌর পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প ও ৫৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার পোল্ডার নং–৭২ এর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের স্থায়ী পুনর্বাসনসহ ঢাল সংরক্ষণ প্রকল্প দুটিও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমার গ্রাম–আমার শহর: পাইলট গ্রাম উন্নয়ন’ প্রকল্পটি পাইলট ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটির মাধ্যমে গ্রামীণ আবাসিক এলাকা তৈরি করা হবে। এখানে পানি সরবরাহ, জ্বালানি, পয়ঃনিষ্কাশন এবং পরিকল্পিত নগরের মত করে নির্মাণ করা হবে। সরকারি সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষে সমন্বয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হবে। তবে পরের প্রকল্পগুলো এই নামে হবে না। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামের নাগরিকদের শহুরে সুবিধা কীভাবে দেওয়া হবে তার একটি মডেল স্থাপন করা হবে। অন্য প্রকল্পগুলোতে ওই মডেল অনুসরণ করা হবে। খবর বিডিনিউজের।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে শহরের সকল সুবিধা গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা তৃতীয়বারের মত সরকারে আসে আওয়ামী লীগ। এরপর দেশের গ্রামগুলোতে টেকসইভাবে আধুনিক নগর সুবিধা সমপ্রসারণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ২০২১ সালে একটি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প নেওয়া হয়। সেই প্রকল্পের আওতায়, স্থানীয় সরকার বিভাগ আটটি সমীক্ষা করে। সেজন্য আট বিভাগের আট ইউনিয়ন এবং বিশেষ এলাকা হিসেবে হাওর, পাহাড় ও চরাঞ্চল থেকে সাতটি ইউনিয়ন বাছাই করা হয়। টানা দুই বছর নিবিড় সমীক্ষার পর প্রকল্প প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পাইলট প্রকল্পের জন্য যোগাযোগ অবকাঠামোতে দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা গ্রাম, বিশেষ করে হাওড় বা পানি বেষ্টিত এবং পাহাড়ঘেরা দুর্গম গ্রামগুলোকে বাছাই করা হয়েছে। মূলত এটি একটি মাস্টারপ্ল্যানের অংশ। এই মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য এই প্রকল্পটি একটি মডেল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে এলজিইডি এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। পাইলট প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত।












