শিয়ালবুক্কা গ্রাম রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বৃহত্তর জনপদ। এই গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দাকে বিভক্ত করেছে মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া শিয়ালবুক্কা খাল। প্রতিদিন খাল পেরিয়ে দুই পাড়ের বাসিন্দাদের যাতায়াত করতে হয়। সম্প্রতি এই খালে নানী ও নাতি স্রোতের টানে ভেসে গিয়ে মৃত্যুর পর স্থানীয়রা এই খালের ওপর একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষের প্রধান পেশা কৃষি কাজ। গ্রামের অধিকাংশ মানুষের বসবাস শিয়ালবুক্কা খালের উত্তর পাড়ে হলেও প্রায় প্রত্যেকেরই ক্ষেত–খামার রয়েছে দক্ষিণ পাড়ে। তাই প্রতিদিন কয়েকবার এই খাল পায়ে হেঁটে পার হতে হয় তাদের। এতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় বাসিন্দাদের। প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে নিজেরাই টাকা উঠিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো বানালেও বর্ষা এলে তা ভেসে যায়। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হলেও তা অনেকটা নড়বড়ে হয়ে গেছে। এটা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর। গত ১০ জুন শিয়ালবুক্কা খাল পায়ে হেঁটে পার হতে গিয়ে রোকেয়া বেগম (৫০) ও তার নাতি ইসমাঈল হোসেন (৮) পানির স্রোতে ভেসে যায়। একদিন পর তাদের নিথর দেহ উদ্ধার হয়। এরপর থেকে এই খালের ওপর একটি কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। মো. আবদুল আজিজ নামে একজন বলেন, প্রতিবছর আমরা নিজেরাই বাঁশের সাঁকো বানিয়ে চলাচল করি। গ্রামের প্রত্যেক বাসিন্দাকেই এই খাল পার হতে হয়। তাই এখানে একটি স্থায়ী ছোট ব্রিজ কিংবা কালভার্ট করা গেলে সবার জন্য উপকার হতো।
মো. নাছির উদ্দিন নামে একজন বলেন, আজকে খালে শিশুসহ দু’জন মানুষ ভেসে গিয়ে মারা গেছে। একটি ব্রিজ থাকলে হয়ত আজ তাদের এভাবে মরতে হতো না। তাই আর কাউকে যেন এভাবে প্রাণ দিতে না হয় তার আগেই একটি ব্রিজ করার দাবি জানাচ্ছি।
এই ব্যাপারে রাজানগর ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার জানান, খালের দুই পাড়ে ক্ষেতে–খামারে হাজার হাজার মানুষের বসবাস রয়েছে। তাদের একটি ব্রিজের খুবই দরকার। পরিষদের পক্ষ থেকে শিয়ালবুক্কা খালের নতুন পাড়া সংলগ্ন এলাকায় একটি কাঠের ব্রিজ করে দেয়া হয়েছে। তবে স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণে পিআইও এবং এলজিইডির মাধ্যমে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত এটি বাস্তবায়ন হবে।