আজাদী : নির্বাচিত হলে এলাকাবাসীর জন্য কী করবেন?
মো. মাহামুদুর রহমান : ১৩ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডের মূল সমস্যা হলো পানির অভাব। এ ওয়ার্ডের প্রায় ৭০ শতাংশ জায়গা রেলওয়ের। রেলওয়ে এ অংশটুকুতে ঠিকমতো পানি সরবরাহ করতে পারে না। আবার যে ৩০ শতাংশ এলাকা রেলওয়ের আওতাধীন নয় সেই অংশেও ওয়াসার পানি ঠিকমতো আসে না। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমি যদি কাউন্সিলর নির্বাচিত হই তাহলে পানি সমস্যাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখব।
মাদকের বিরুদ্ধে আপনার পদক্ষেপ কী হবে?
মাহামুদুর : আমাদের এলাকায় মাদকের সমস্যা একসময় প্রকট থাকলেও প্রশাসন ও আগের কাউন্সিলরের ভূমিকার কারণে এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। মাদকের সমস্যা কমলেও এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং। বিপথগামী এই কিশোরদের শুধু দমন করার কথা চিন্তা করলে তো হবে না, তাদের সৃষ্টিশীল কোনো কাজে লাগানোর ব্যাপারটিও আমাদের ভাবতে হবে। আমি তাদের প্রশিক্ষণের জন্য একটা প্রশিক্ষণ একাডেমি, ফুটবল ও ক্রিকেট একাডেমি গড়ে তুলব, যাতে তারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে না জড়ায়।
রেলওয়ের জায়গা থেকে উচ্ছেদের ব্যাপারে কী করবেন?
মাহামুদুর : আমাদের এলাকার রেলওয়ের পরিত্যক্ত জায়গাগুলো থেকে মানুষজনকে উচ্ছেদ করার পর সেগুলো রেলওয়ের কোনো কাজে আসছে না। আমি যদি কাউন্সিলর নির্বাচিত হতে পারি তাহলে রেলওয়ের সাথে সমন্বয় করে লিজের মাধ্যমে সেই জায়গায় মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
আপনার এলাকার পর্যটন সম্ভাবনা বিষয়ে কী ভাবছেন?
মাহামুদুর : আমাদের এলাকাটি প্রাকৃতিকভাবে অত্যন্ত সুন্দর। এখানে আছে প্রীতিলতার স্মৃতিবিজড়িত ইউরোপিয়ান ক্লাব, রেলওয়ে জাদুঘরসহ সবুজের সমারোহ। আমাদের সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরণ সাহেবের উদ্যোগে সিটি কর্পোরেশন এ ওয়ার্ডে ইতোমধ্যে শেখ রাসেল শিশু পার্ক গড়ে তুলেছে। এটি এখনও উদ্বোধন হয়নি। আমি যদি কাউন্সিলর নির্বাচিত হতে পারি তাহলে এ ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোকে মানুষের কাছে তুলে ধরে পর্যটনের সম্ভাবনা তৈরির চেষ্টা করব।
আবর্জনা অপসারণের বিষয়ে পরিকল্পনা কী?
মাহামুদুর : আমাদের ওয়ার্ডে ময়লা-আবর্জনার যে সমস্যা আগে ছিল তার শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ সাবেক কাউন্সিলর হিরণ সাহেব সমাধান করে গেছেন। আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে বাকি কাজ সমাধান করার চেষ্টা করব।
রাজনৈতিক কোন্দল দূর করতে কী করতে চান?
মাহামুদুর : ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সহকারী সমন্বয়ক ও এই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ছিলেন আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জমির আলী কন্ট্রাক্টর। আমিও সক্রিয়ভাবে ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। তখন থেকেই দেখেছি আমাদের এখানে কোনো রাজনৈতিক কোন্দল ছিল না। তবে ইদানীং এটা প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে এলাকার যুবকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ সুযোগে এলাকার কিশোর অপরাধীদের সাথে যোগ দিচ্ছে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। এ কারণে এলাকার সামাজিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আমি যেকোনোভাবে আমাদের এলাকাটিকে গ্রুপিংমুক্ত রাখার চেষ্টা করব।
তরুণ-যুবকদের জন্য কী করবেন?
মাহামুদুর : তরুণ-যুবকরা আগামী দিনের শক্তি। তারা যাতে বিপথগামী না হয়, সুযোগ-সুবিধার অভাবে অন্ধকারে হারিয়ে না যায়, সেজন্য প্রশিক্ষণ একাডেমির পাশাপাশি তাদের জন্য লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করারও পরিকল্পনা রয়েছে।
নির্বাচনে জয়লাভের ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
মাহামুদুর : আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করলেও আমার এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আমাকে উৎসাহিত করে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছেন। আমি বলব, এলাকাবাসী যেন কোনোরকম অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হন। আগামী ২৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য তাদের অনুরোধ জানাব। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে নির্বাচন হবে। এ পদ্ধতিতে যার ভোট তাকেই দিতে হবে। অপপ্রচারে কান না দিয়ে সবাই ভোট দিতে আসবেন এবং আমাকে কাউন্সিলর নির্বাচিত করবেন-এ ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।