পাকিস্তানকে রক্ষায় মরিয়া মার্কিন-চীনের কূটনৈতিক শেষ চেষ্টাও এদিন ব্যর্থ করে দেয় সোভিয়েত ইউনিয়ন। এ নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তৃতীয়বারের মতো ভেটো দেয় রাশিয়া। এই দিনই বঙ্গোপসাগরের দিকে যাত্রা শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহর। অন্যদিকে নিশ্চিত পরাজয় দেখে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার-আল বদর, আল শামস বাহিনী শিক্ষক, সাংবাদিক, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক ইত্যাদি বুদ্ধিজীবীদের ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করে।
এ সময় মিত্রবাহিনী জানমালের ক্ষতি কমাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে আত্মসমর্পণের জন্য চাপ দেয়। ঢাকার পূর্ব ও উত্তর দিক ছাড়াও পশ্চিমেও অবস্থান নেয় মিত্রবাহিনী। অর্থাৎ মিত্রবাহিনী ঢাকা ঘিরে ফেলে। টাঙ্গাইলে নামে মিত্রবাহিনীর ছত্রীসেনারা। অন্যদিকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল শফিউল্লাহর ‘এস’ ফোর্স ঢাকার উপকণ্ঠে ডেমরা পৌঁছায়।
সৈয়দপুরে আত্মসমর্পণ করে আটচল্লিশ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের অধিনায়কসহ ১০৭ পাকিস্তানি সেনা। এছাড়া খুলনা, বগুড়া ও চট্টগ্রামে পাকিস্তানি অধিনায়কেরা শেষ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বিভিন্ন অঞ্চলে দলে দলে পাকিস্তানি সৈন্যরা আত্মসমর্পণ শুরু করে দেয়। একাত্তরের আজকের দিনে কুমিল্লার ময়নামতিতেই এক হাজার ১১৪ জন পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করে।
ভারতীয় বিমানবাহিনী দুই দিন বিরতি দিয়ে আবার ঢাকায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ শুরু করে। পাশাপাশি ঢাকা ঘিরে রাখা মিত্র বাহিনী ব্যাপক গোলাবর্ষণ শুরু করে। ফলে প্রাণ বাঁচাতে ঢাকায় আটকে পড়া পাকবাহিনী আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। অন্যদিকে, বিভিন্ন এলাকা পাকিস্তানি দখলমুক্ত হওয়ায় রাস্তায় বেরিয়ে উল্লাস শুরু করেন প্রায় ৯ মাস অবরুদ্ধ থাকা সাধারণ মানুষ।