পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কমলেও খুচরায় এখনো চড়া

জাহেদুল কবির | শুক্রবার , ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৯:১৮ পূর্বাহ্ণ

চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দরপতন হলেও খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়ছে না। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম কমেছে ২০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছে সরকার। শুল্ক কমানোর প্রভাবে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কমতে থাকে। দেশের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানিও স্বাভাবিক আছে। এছাড়া সমুদ্র বন্দর দিয়ে আসছে পাকিস্তান, মিশর ও তুরস্কের পেঁয়াজ। এই মুহূর্তে বাজারে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতিও নেই। ভোক্তারা বলছেন, পাইকারিতে যখন পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়, তখন খুচরা ব্যবসায়ীরা সাথে সাথে দাম বাড়িয়ে দেন। কিন্তু যখন দাম কমে, তখন খুচরা বিক্রেতারা কমান না। বর্তমানে পাইকারি দামের চেয়ে কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। বিষয়টি প্রশাসনের নজররদারি করা দরকার।

গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকায়। এছাড়া পাকিস্তানি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা ও তুরস্কের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৫ টাকায়। তবে খুচরা বাজারে সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৯৫ টাকায়। পেঁয়াজের আড়তদাররা বলছেন, পেঁয়াজের বাজার চাহিদা ও যোগানের উপর নির্ভর। চাক্তাই খাতুনগঞ্জে গুটিকয়েক ব্যক্তি পেঁয়াজ আমদানি করেন। বাকিরা কমিশনের ভিত্তিতে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। অর্থাৎ পেঁয়াজ আমদানিকারক যে দাম নির্ধারণ করে দেন, সেই দামে তারা বিক্রি করেন। এর বিনিময়ে কেজিপ্রতি তারা নির্ধারিত একটি কমিশন পেয়ে থাকেন। তাই আড়তদারদের পক্ষে দাম উঠানামা করার কোনো সুযোগ নেই। আড়তদারদের পক্ষে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করাও সম্ভব নয়। কিন্তু আমাদের দেশে পেঁয়াজের দরবৃদ্ধির সাথে সাথে প্রশাসনের লোকজন আড়তে অভিযান পরিচালনা করেন। এতে আতঙ্ক তৈরি হয়। অথচ আড়তদাররা পেঁয়াজ আমদানি করেন না।

জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি(তাহেরপুরী), বারি(রবি মৌসুম), বারি(খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারের উপর খুব বড় প্রভাব ফেলে।

চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম দৈনিক আজাদীকে বলেন, পেঁয়াজের দাম এখন নিম্নমুখী। চাক্তাই খাতুনগঞ্জে প্রত্যেক ব্যবসায়ীর দোকান গুদামে এখন পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। পেঁয়াজ আমদানিও স্বাভাবিক রয়েছে। আশা করি পেঁয়াজের দাম বাড়বে না।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস দৈনিক আজাদীকে বলেন, পেঁয়াজের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। এখন দামও কমছে। সরবরাহ বাড়লে দাম আরো কমবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাপিয়া সারোয়ার আর নেই
পরবর্তী নিবন্ধভারতে আটক ৭৮ নাবিক : আলোচনার মাধ্যমে ফেরানোর আশা সরকারের