পাইকারিতে চড়া ভোজ্যতেলের বাজার

মণপ্রতি দাম বেড়েছে ১৫০ টাকা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৫ জানুয়ারি, ২০২২ at ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ

পাইকারিতে এখনো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল। দুই সপ্তাহ আগেও সয়াবিন ও পাম তেলের বাজার কিছুটা নিম্নমুখী ছিল। তবে চলতি সপ্তাহ থেকে আবারো বাড়ছে বাজার। দীর্ঘদিন ধরে ভোজ্যতেলের দাম সপ্তাহের দুদিন দাম কমছে তো বাকি চারদিন ঊর্ধ্বমুখী থাকছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ক’দিনের ব্যবধানে মণপ্রতি সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা পর্যন্ত।
খাতুনগঞ্জের তেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এখনো বুকিং দর ওঠানামা করছে। তাই সয়াবিন ও পাম উভয় তেলের দাম স্থির থাকছে না। তেলের বাজার পুরোটাই আমদানি নির্ভর। এখানে আন্তর্জাতিক বাজার কমলে দাম এমনিতে কমে যাবে। তবে ভোক্তাদের অভিযোগ, ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক বাজার নিম্নমুখী। কিন্তু আমাদের দেশে এর কোনো প্রভাব নেই। অথচ প্রায় সময় আন্তর্জাতিক বাজার বৃদ্ধির দোহাই দিয়ে দাম বৃদ্ধি করেছেন তারা। খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৯৩০ টাকায়। ১১০ টাকা বেড়ে গিয়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৪০ টাকায়। অন্যদিকে এক সপ্তাহ আগে প্রতি মণ সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে মণপ্রতি ৫ হাজার ৩৮০ টাকায়। বর্তমানে মণপ্রতি ১৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৪৩০ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের কয়েকজন তেল ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আইনগতভাবে স্বীকৃত নয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ। তেল কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটি বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্য আসেনি, কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে তেল ও চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়। বলা যায়, ডিও কারসাজির কারণে মাঝে মাঝে পণ্যের দাম আকাশচুম্বি হয়।
খাতুনগঞ্জের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী জাহানারা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আবু বক্কর আজাদীকে বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক বাজার ওঠানামা করছে। এর ফলে আমাদের দেশেও ভোজ্যতেলের বাজার স্থির থাকছে না। আমরা যতটুকু জেনেছি, তেলের উৎপাদন প্রত্যাশামতো হয়নি। বিশেষ করে আমাদের দেশে পাম তেল আসে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে। সেসব দেশে করোনার কারণে উৎপাদন ভালো হয়নি। এছাড়া সয়াবিন আমদানি হয় ব্রাজিল ও অস্ট্রেলিয়া থেকে। এছাড়া ভোজ্যতেলের সরবরাহ ব্যবস্থা নাজুক ছিল। তাই দাম বৃদ্ধিতে প্রভাব পড়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকেন সম্পত্তি ক্রোক করা হবে না জানতে চেয়ে সাবেক ওসিসহ ৭ জনকে নোটিশ
পরবর্তী নিবন্ধসুচরিত চৌধুরী স্মরণসন্ধ্যা আজ