চট্টগ্রাম থেকে শুরু হচ্ছে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল এবং অঙ্গসংগঠন যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের মাসব্যাপী যৌথ আয়োজন তারুণ্যের সেমিনার ও সমাবেশ। এর মধ্যে ‘কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার আজ বিকেলে নগরের চট্টেশ্বরী রোডের একটি সম্মেলন কেন্দ্রে হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া আগামীকাল বিকেলে ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে আয়োজন করা হবে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’। এরপর পর্যায়ক্রমে দেশের আরো তিনটি বিভাগীয় শহরে এ কর্মসূচি পালিত হবে। গতকাল দুপুরে নগরের নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জেলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, সিনিয়র সহ–সভাপতি ইয়াছিন আলী, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির, নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাহেদ, নগর সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বেলায়েত হোসেন বুলু ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জমির উদ্দিন নাহিদ, নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. সাইফুল আলম ও সদস্য সচিব শরীফুল ইসলাম তুহিন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায়, বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে শরিক রাজনৈতিক দলগুলো ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নে তরুণ সমাজকে নীতি–প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে এ কর্মসূচি আয়োজন করা হচ্ছে। কর্মসূচির প্রতিটি আয়োজনেই গুরুত্ব পাবে বিষয়ভিত্তিক পলিসি ডায়লগ, যার মাঝে রয়েছে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবেশ, প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক অধিকারসহ নানা বিষয়ে তরুণদের ভাবনা।
আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেন, সমাবেশ হবে তারুণ্যের এক মহামিলন। এখানে সমবেত হবেন দেশের নানা শ্রেণি–পেশা, বিশ্বাস, মতাদর্শ ও সামাজিক পটভূমি থেকে উঠে আসা তরুণ–তরুণীরা যারা স্বপ্ন দেখেন একটি আধুনিক, ন্যায্য ও মানবিক বাংলাদেশের। তাদের সঙ্গে থাকবেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মী ও সমর্থকবৃন্দ, যারা গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই ঐতিহাসিক সমাবেশে তারা শুধু উপস্থিত থাকবেন না, বরং নিজেদের হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসা আশা–আকাঙ্ক্ষা, অভিজ্ঞতা ও স্বপ্নগুলোকে প্রকাশ করবেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিশ্বাস করেন, তরুণরাই দলের চালিকা শক্তি। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে তরুণদের সম্পৃক্ততার বিকল্প নেই। তাই তিনি তরুণদের নিয়ে এই আয়োজনের অভিনব পরিকল্পনা করেছেন। বিএনপি তারুণ্যনির্ভর দল হিসেবে সবসময় তরুণদের মূল্যায়ন করেছে। এই আয়োজন তারই বহিঃপ্রকাশ।
যুবদল সভাপতি বলেন, কর্মসূচিগুলোর মূল লক্ষ্য হলো, জনগণের ভাবনা ও প্রত্যাশার সমন্বয়ে দলীয় নীতি ও রূপরেখা আরও জনকল্যাণমুখী করে তোলা। আমরা জনগণের মতামত ও চিন্তা–ভাবনা সংগ্রহ করব, যার ভিত্তিতে আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক নীতিগুলোকে আরও জনকল্যাণমুখী ও মানুষের বাস্তব চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পরিমার্জন করতে পারব।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ, সম্পৃক্ততা ও সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়াকে আরও জনমুখী ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ করে তুলতে চাই। এর মাধ্যমে আমরা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সরকার ব্যবস্থা, এবং সকল শ্রেণী–পেশার মানুষের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারবো।
অতিথি কারা : আজ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আলোচক হিসেবে অংশ নেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশ্লেষক ড. আব্দুল্লাহ্–আল–মামুন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড. জামাল উদ্দিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাহরিন খান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও এক্টিভিস্ট ডা. জাহেদ উর রহমান, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহ, বিশ্বখ্যাত টেকনোলজি কোম্পানি ওরাকলের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার মুনতাসির মুনীর, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট সাইয়েদ আব্দুল্লাহ, যুক্তরাষ্ট্রের স্যানট্যান্ডার ব্যাংকের সিনিয়র ডাইরেক্টর শাফকাত রাব্বী এবং ডিজিটাল প্লাটফর্ম পাঠাও–এর সিইও ফাহিম আহমেদ। এছাড়া আগামীকাল তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।