বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরেও কমছে না শীতকালীন সবজির দাম। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যের কারণে সবজির দাম ভোক্তা পর্যায়ে হয়ে যাচ্ছে দ্বিগুণের বেশি। গত কয়েক বছরে ফুলকপি, শিম ও বাধাকপির মতো শীতকালীন সবজি দাম কেজিপ্রতি ৫০ টাকার নিচে বিক্রি হয়েছে। তবে এ বছর ভিন্ন চিত্র দেখা দিচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে বিশেষ করে শীতকালীন সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতকালীন সবজির ভালো ফলন হলেও পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে দাম বাড়ছে। তবে ভোক্তারা বলছেন, একজন কৃষক পাইকারীতে একটি ফুলকপির দাম পাচ্ছে ২০–২৫ টাকা। অথচ বাজারে ভোক্তাকে সেটি কিনতে হচ্ছে ৫০–৬০ টাকায়। বিষয়গুলোতে প্রশাসনের নজরদারির কারণে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও মধ্যস্বত্বভোগীরা সুযোগ পাচ্ছে।
সবজির আড়তদাররা বলছেন, নগরীর বাজারগুলোতে আগে স্থানীয় উপজেলাগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে সবজি আসতো। তবে এবার সেটি অনেক কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। আগে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, বাঁশখালী, সীতাকুণ্ড এবং হাটহাজারীসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে শীতকালীন সবজি আসতো।
গতকাল নগরীর কাজীর দেউরি ও ২ নং গেট কর্ণফুলী কমপ্লেঙ কাঁচা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীতকালীন সবজির মধ্যে প্রতি কেজি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০–৬০ টাকায়। এছাড়া শিম ৬০–৭০ টাকা এবং বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০–৫৫ টাকায়। অন্যদিকে মুলা ৫০–৬০ টাকা, আলু ৫০–৬০ টাকা, বেগুন ৬০–৭০ টাকা, করলা ৬০–৭০ টাকা, লাউ কেজি ৫০–৬০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া কাঁচা ৪০ টাকা, পাঁকা ৫০ টাকা, পটল ৭০–৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০–৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০–৭০ টাকা এবং কাঁচা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।
কাজীর দেউরি বাজারের সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ আজম বলেন, বাজারে আসলে সবজির সরবরাহ গত বছরের তুলনায় অনেক কম। এছাড়া উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বৃষ্টির কারণে সবজির উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে। যার ফলে প্রত্যাশামাফিক সবজি বাজারে আসছে না। সবজি কাঁচা পণ্য, চাইলে মজুদ করে রাখা যায় না। সরবরাহ বাড়লে দামও কমে যেতো।
এম এম ইলিয়াছ উদ্দিন নামের একজন ক্রেতা জানান, সবজির বাজার দীর্ঘদিন ধরে বেশি। বেশি হলেও কী করবো, আমাদের তো বেশি দামে কিনতে হয়। বাজারে ব্যবসায়ীরা যা ইচ্ছা তাই করছে। এখানে প্রশাসনের কোনো নিয়ন্ত্রণ আছে বলে মনে হয় না।
ফটিকছড়ির নিশ্চিন্তাপুর এলাকার কৃষক আবদুস সামাদ বলেন, কৃষি কাজ করে এখন মুনাফা করতে পারছি না। আমরা ফসল উৎপাদন করে লোকসান গুনছি, অন্যদিকে আমাদের থেকে ফসল কিনে মধ্যস্বত্বভোগীরা দ্বিগুণ–তিনগুণ মুনাফা করছে।