বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন পালাবদলের সুর। মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসান আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও, তাদের ক্যারিয়ার শেষ বলে দেওয়াই যায়। তামিম ইকবাল অবসর নিয়েছেন। মুশফিক ছেড়ে দিয়েছেন টি– টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে ফরম্যাট। দেশের অভিজ্ঞ পাঁচ ক্রিকেটারের মধ্যে এখন শুধু টেস্টে দেখা যাবে মুশফিককে। এরপরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে না বলে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। দেশের ক্রিকেটের সেরা ওই প্রজন্ম তাদের যাত্রা শেষ করেছে কোনো মহাদেশীয় বা বৈশ্বিক ট্রফি ছাড়াই। ২০১৭ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমি–ফাইনাল খেলা বাংলাদেশের হয়ে তাদের সেরা সাফল্য। এছাড়া এশিয়া কাপে একাধিকবার রানার্স–আপ হয়েছে বাংলাদেশ। সাকিব–তামিম–মুশফিকদের বিদায়ের পর দায়িত্ব এখন মিরাজ, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন কুমার দাসদের কাঁধে। নতুন শুরুর এই অভিযানে সারথিদের অন্যতম একজন মেহেদী হাসান মিরাজ। অগ্রজদের অপূর্ণতা ঘোচাতে ও পরের প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে খুব করে বড় ট্রফি জিততে চান এই স্পিন অলরাউন্ডার। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে গতকাল শনিবারের ম্যাচ শেষে মিরাজ বললেন, আগের প্রজন্মের রেখে যাওয়া জায়গা থেকে দলকে পরের পর্যায়ে নিতে বড় টুর্নামেন্ট জিততে চান তারা। ‘প্রত্যেকটা মানুষেরই একটা সময় নিজের জায়গা থেকে সরে যেতে হয়। তাদের যে দায়িত্বটা ছিল, তারা বাংলাদেশকে একটা ধাপে নিয়ে এসেছেন। আমাদের কাজ থাকবে, এখান থেকে আরেকটা ধাপে নিয়ে যাওয়া। আমরা কিন্তু এখনও ট্রফি জিততে পারিনি। তাই আমাদের লক্ষ্য থাকবে যেকোনো বড় টুর্নামেন্ট জেতা। একটা ট্রফি জিততে পারলে আমাদের প্রজন্মের জন্য ভালো হবে।’ পালাবদলের এই যাত্রায় পুরোপুরি নবীন ও তরুণ দল নিয়ে খেলতে হবে না বাংলাদেশের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে লিটন, সৌম্য সরকার, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমানদের। মিরাজ, শান্তরাও ৭–৮ বছরের বেশি সময় ধরে খেলছেন জাতীয় দলে। তাই আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভালো করার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে বলে মনে করেন মিরাজ। ‘আমরা যারা আছি, সবার পারফর্ম করা জরুরি। দলে এখন ৬–৭ জন ক্রিকেটার আছে যারা প্রায় ৭–৮–১০ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছে। সবাইকে নতুন বলা যাবে না। যারা আছে নতুন ২–৩ বছর খেলেছে, তাদের সঙ্গে যারা ৮–৯ বছর খেলেছে তাদের মিলিয়ে একটা পরিকল্পনা করে সমন্বয় নিয়ে এগোতে হবে।’ ‘আমার মনে হয়, আমাদের এখন যথেষ্ট অভিজ্ঞতা হয়েছে। মুশফিক ভাই বা যারা ছিলেন, তারা ৭–৮ বছর সার্ভিস দেওয়ার পর একটা জায়গায় নিয়ে গেছেন। আমরাও প্রায় অনেক বছর খেলেছি। আমাদের লক্ষ্য থাকবে বাংলাদেশ দলকে একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া।’ ওয়ানডেতে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে অমানিশার আঁধারে বাংলাদেশ। ২০২৩ বিশ্বকাপের পর সদ্য সমাপ্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও হতাশার সাগরে হাবুডুবু খেয়েছে তারা। তাই ২০২৭ বিশ্বকাপে ভালো কিছু পেতে এখন থেকেই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার কথা বললেন মিরাজ।
‘আমরা যদি একটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোই… সবার সঙ্গে সমন্বয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন ক্রিকেটারকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে তাকে সুযোগ দিতে হবে। বিশ্বকাপের আগে আমাদের যত ওয়ানডে আছে, ক্রিকেটারদের সুযোগ দিতে হবে।’ ‘আমরা যদি ২–৩ মাস আগে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেই, তাহলে কঠিন। তবে এখন থেকে যদি সবাই কাজ শুরু করে, সবাই সম্পৃক্ত থেকে যদি আগে থেকে দলটা সেট করে, তাহলে একটা ভালো কিছু হবে।’