পরীক্ষা কেন্দ্রে সাপের কামড় খেয়ে হলে বসা হয়নি পটিয়ার শিক্ষার্থীর

আশঙ্কা এক বছরের পিছিয়ে পড়ার

পটিয়া প্রতিনিধি | সোমবার , ৭ জুলাই, ২০২৫ at ৯:৫১ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের পটিয়ায় ভয়াবহ এক ঘটনার শিকার হয়েছে এক কলেজ শিক্ষার্থী। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিষাক্ত সাপের কামড়ে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ছেলের নাম মোঃ বোরহান উদ্দিন (১৯)। সে হুলাইন সালেহ নূর ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

বোরহান উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়নের নলান্দা গ্রামের ফরিদুল আলমের ছেলে। আজ সোমবার সকালে আইসিটি পরীক্ষার সময় খলীল মীর ডিগ্রি কলেজের পরীক্ষাকেন্দ্রের হলে এই ঘটনা ঘটে।

বোরহানের মা জেসমিন আক্তার জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় পরীক্ষা শুরুর মুহূর্তে হল রুমে বসে থাকা অবস্থায় হঠাৎ বিষাক্ত সাপ তাকে কামড়ে দেয়। বিষয়টি টের পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা চিৎকার শুরু করলে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাসপাতালে নেওয়ার পর সাগরকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা শুরু হয়। তবে পরিবারের সদস্যরা পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব কিনা জানতে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, দুপুর ১টার মধ্যে পরীক্ষার হলে হাজির করলে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।

মায়ের চোখে পানি, বুকভরা কষ্ট নিয়ে সাগরকে নিয়ে মেডিকেলের বন্ড সাইন করে কলেজে হাজির হন স্বজনরা। কিন্তু পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছেও মিলল না পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ। মাত্র ১৫ মিনিট দেরি দেখিয়ে তাকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি।

এ ঘটনায় বোরহানের পরিবার হতাশায় ভেঙে পড়েছে। একমাত্র ছেলের এমন দুর্ঘটনা ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় তার ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। পরিবারের দাবি, মানবিক দিক বিবেচনা করে তার সুযোগ থাকা উচিত ছিল।

এ বিষয়ে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সামিহা রওশন জানান, সকালেই সাগরকে হাসপাতালে আনা হয়। সাপের কামড়ের কারণে তাকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন।

এখন সাগরের পরিবার দিশেহারা। চোখেমুখে অনিশ্চয়তার ছাপ—’একটা বিষাক্ত সাপের কামড়ে কি তবে শেষ হয়ে যাবে ছেলের স্বপ্ন?’

পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত পটিয়া খলিল মীর ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপাল এসএম মিজবাহউর রহমান জানান, একজন পরীক্ষার্থীকে সকালে সাপে কামড় দেওয়ার কথা তিনিও শুনেছেন। তবে সাপটি আর কেউ দেখেননি। সাপে কামড়ানো পরীক্ষার্থী পটিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন ছেলেটি মেডিকেল কতৃপক্ষকে বলে পরবর্তীতে পরীক্ষা কেন্দ্রে এলে তাকে ৩০ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানুর রহমান জানান, পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে সাপে কামড় দেওয়ার বিষয়টি তাকে কেউ জানায়নি।

স্থানীয়রা বলছেন, শিক্ষা বোর্ড ও প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপে যেন সাগরের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। এটাই এখন এলাকার মানুষের একটাই দাবি—মানবতার জয় হোক, সাগরের স্বপ্ন বাঁচুক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে মেম্বার হোটেলসহ তিন প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধপরীক্ষাকেন্দ্রে সাপের কামড়, হাসপাতালে শিক্ষার্থী