পরীক্ষায় বসছে না শিক্ষার্থীরা, বুয়েটের চলমান পরীক্ষা স্থগিত

| রবিবার , ২১ এপ্রিল, ২০২৪ at ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ

ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ায় চলমান পরীক্ষা স্থগিত করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার বিকেলে উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদারের সভাপতিত্বে জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা বলেছেন বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আল আমিন সিদ্দিক। খবর বিডিনিউজের।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় আজ একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় চলমান পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তবে কবে এসব পরীক্ষা নেওয়া হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা বসব, আলোচনা করব, এরপর নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে। রোজার ঈদ ও পহেলা বৈশাখের টানা ১৩ দিনের ছুটি শেষে গত বুধবার বুয়েট ক্যাম্পাস খোলে। সেদিন দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হলেও ‘ছাত্র রাজনীতিমুক্ত’ ক্যাম্পাসের দাবিতে পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রাখেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা ছিল, কিন্তু তারা তা বর্জন করেন। পরদিন বৃহস্পতিবার টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেন ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও। পরীক্ষা থাকায় এ দুদিন কোনো ব্যাচের ক্লাস ছিল না। শনিবারও ২০তম ব্যাচের একটি পরীক্ষা ছিল, আন্দোলনের অংশ হিসেবে সেটিও তারা বর্জন করেছেন। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে সারারাত ধরে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুয়েটে নিষিদ্ধ হয় ছাত্ররাজনীতি। গত ২৮ মার্চ গভীর রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ একদল নেতাকর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে ২৯ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ছয় দফা দাবিতে ক্লাসপরীক্ষা বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা। ৪ এপ্রিল থেকে ঈদের ছুটি শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বীর হলের সিট বাতিল করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, রাব্বীই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাদের সমাগম ঘটিয়েছিলেন। পরে ওই শিক্ষার্থীর রিট আবেদনে হলের সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেয় হাই কোর্ট। তার আলাদা আবেদনে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতির ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞাও স্থগিত করে উচ্চ আদালত। তাতে প্রকৌশল শিক্ষার এ বিদ্যাপীঠে ছাত্র রাজনীতি ফেরার পথ খোলে। এদিকে ক্যাম্পাস খোলার আগে গত মঙ্গলবার বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমানকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এ পদে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুরকৌশলের অধ্যাপক মোহাম্মদ আল আমিন সিদ্দিককে। এরপরও শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কার্যক্রমে ফেরেননি। পরীক্ষা বর্জনের আন্দোলনের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাই কোর্ট যে আদেশ দিয়েছে, তার বিরুদ্ধে আপিল করা হলে এবং বর্জন করা পরীক্ষার নতুন তারিখ ঠিক করা হলে তারা অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে ফিরবেন। আপিলের বিষয়ে অধ্যাপক আল আমিন বলেন, হাই কোর্টের লিখিত আদেশ না পাওয়ায় আমরা এখনও সেদিকে চিন্তাভাবনা করিনি। লিখিত আদেশ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশুক্রবার রাজধানীতে সমাবেশ করবে বিএনপি
পরবর্তী নিবন্ধইসরায়েলকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের জবাব দেবে ইরান