বাফুফের বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে ১৬ বছর পর বাফুফে সভাপতি পদে নতুন কেউ আসছেন এটা নিশ্চিত। তবে আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচনের ঘোষণা আনুষ্ঠানিক কেউ দেননি। তবে দুই এক দিনের মধেই বাফুফের সাবেক সহ–সভাপতি তাবিথ আউয়াল নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে। যদিও এই ব্যাপারে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেননি সাবেক এই ফুটবলার ও সংগঠক। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমেই তিনি ঘোষণা দিতে পারেন। তাবিথ আউয়ালের পাশাপাশি বাফুফে সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন আরো দুই–তিন জন। সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের কর্ণধার তরফদার রুহুল আমিন গত নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তার অবস্থান প্রত্যাহার করেন। আসন্ন নির্বাচনের জন্য তিনি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন কাজী সালাউদ্দিনের বিপক্ষে নির্বাচন করার। কাজী সালাউদ্দিন এখন প্রার্থী না হওয়ায় ঘোষণা দেয়ায় তিনি নির্বাচন করবেন কিনা সেটা এখন দেখার বিষয়।
গত চার বছরে বাংলাদেশের ফুটবলে অন্যতম আলোচিত সংগঠকের নাম ইমরুল হাসান। বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি বাফুফের সহ–সভাপতি হিসেবে কাজ করছেন। বসুন্ধরা গ্রুপের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফুটবলের বিভিন্ন ক্লাব–জেলা পর্যায়ে ফুটবল উন্নয়নে সহায়তা করেছেন অনেক। আবার বাফুফের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় আনুষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকতাও করেছে তার গ্রুপ। তাই তাকে সভাপতি হিসেবে দেখার একটা আলোচনা আছে ফুটবলাঙ্গনে। গতকাল বাফুফে ভবনে লিগ কমিটির সভা শেষে তাকে এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। বাফুফের নেতৃত্ব দেয়ার প্রশ্নে তিনি কৌশলী উত্তর দিয়ে বলেন, ‘দেখা যাক, এটার উত্তর সময় বলবে।’
এই তিন জনের মধ্যে নানা প্রেক্ষাপটে তাবিথ আউয়াল খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন। তাবিথ আউয়াল সাবেক ফুটবলার এবং বাফুফেতে আট বছর সহ–সভাপতি ছিলেন। বাফুফের আর্থিক অনটনের বিষয় নতুন কিছু নয়। তাবিথ আউয়াল এখনো বাফুফের কাছে দুই কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছেন। বাফুফের দেনা কাটিয়ে সচ্ছলতা আনার ক্ষেত্রে তাবিথ ভূমিকা রাখতে পারবেন। ক্লাব–জেলা উভয় পর্যায়ে তাবিথের পরিচিতি রয়েছে। ২০২০ সালে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও তাবিথ আউয়াল সহ–সভাপতি পদে টাই করেন। পুনঃনির্বাচনে মহিউদ্দিন আহমেদ মহীর কাছে ৪ ভোটে হারেন। ফুটবল ফেডারেশনে না থাকলেও ফেনী সকার ক্লাব ও তৃণমূল পর্যায়ে ফুটবলে তার কাজ অব্যাহত ছিল। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময় দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ঘটেছে। সেই পটপরিবর্তন তাবিথ আউয়ালের জন্য আরো সহায়ক। তাবিথ আউয়ালের বাবা আব্দুল আউয়াল মিন্টু বিএনপি’র অন্যতম নীতি–নির্ধারক। ব্যবসায়ী সমাজে বেশ গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। তরফদার রুহুল আমিন মূলত ব্যবসায়ী। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে তার ফুটবলাঙ্গনে পথচলা শুরু। ২০১৬–২০২২ পর্যন্ত ফুটবলে অনেক অর্থের বিনিয়োগ করেছেন। বসুন্ধরা কিংসের আগে তিনিই প্রথম পেশাদার ফুটবল ক্লাব সাইফ স্পোর্টিং গড়েন। সেই ক্লাব থেকে জাতীয় ফুটবল দলে এখন অনেকেই প্রতিষ্ঠিত। জেলা–বিভাগীয় পর্যায়ে ফুটবল ফেডারেশন অর্থ সেভাবে দেয়নি কখনো। তরফদার রুহুল আমিনের অর্থায়নে জেলা–বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশন ২–৩ বছর খেলা পরিচালনা করেছে। ফুটবল ফেডারেশনে আনুষ্ঠানিক পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াও মহানগর ক্লাব পর্যায়েও অনেক অর্থ প্রদান করেছেন এই সংগঠক। সভাপতি পদে তিনি শক্ত প্রার্থী হওয়ার সামর্থ্য রাখেন। এদিকে সভাপতি নয় কোনো পদেই নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক।