পদায়ন করা চিকিৎসক যোগ দেননি তিন মাসেও

চমেক হাসপাতাল পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি ওয়ার্ডে সমস্যা

জাহেদুল কবির | শনিবার , ৮ জুন, ২০২৪ at ১০:০৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি ওয়ার্ডে ভর্তি শিশু ক্যান্সার ও রক্তরোগীদের দুর্দশা কাটছে না। ওয়ার্ড চালু হওয়ার পর থেকে এই বিভাগের একমাত্র চিকিৎসক ছিলেন অধ্যাপক ডা. এ কে এম রেজাউল করিম। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করলেও তার বিকল্প কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে পদায়ন করেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে গত ২৯ এপ্রিল ডা. এ কে এম রেজাউল করিম অবসরে যাওয়ার দুই মাস আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ তানভীর আহাম্মেদকে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে চমেকে বদলির আদেশ দেন। তবে সেই বদলি আদেশের পর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত বিভাগে যোগ দেননি ডা. তানভীর। একমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অবসর এবং পদায়ন করা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিভাগে যোগ না দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শিশু ক্যান্সার ও রক্ত রোগীরা এবং মেডিকেলের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্সের শিক্ষার্থীরা। উল্লেখ্য, ১৫ মে দৈনিক আজাদীতে ‘একমাত্র চিকিৎসক অবসরে, অনিশ্চয়তায় শিশু ক্যান্সার ও রক্তরোগীদের চিকিৎসা’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত। জানা গেছে, ডা. তানভীর আহাম্মেদ যোগ না দেওয়ায় ২১ এপ্রিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব বরাবর চিঠি লিখেন চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, চমেক পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে। এখানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্সের পাঠদান, ব্যবহারিক কাজ এবং হাসপাতালের ওয়ার্ড ও বহির্বিভাগ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ প্রদান এবং দ্রুত রোগ নির্ণয় করা হচ্ছে। এ অঞ্চলের শিশু ক্যান্সার রোগীদের জন্য হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগই একমাত্র ভরসা। স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগের গত ৪ মার্চের এক প্রজ্ঞাপনে ডা. মুহাম্মদ তানভীর আহাম্মেদকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগে পদায়ন করা হয়েছে। তিনি বিভাগে অদ্যাবধি যোগদান করেননি।

জানা গেছে, চমেক হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ জন রোগী ভর্তি থাকে। এদের একটি বড় অংশ ব্লাড ক্যান্সারের রোগী। বিশেষজ্ঞ না থাকায় শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসকরা আপাতত ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। তবে অভিজ্ঞতা না থাকায় চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি সিদ্ধান্ত নিতে বেগ পেতে হচ্ছে। এছাড়া রোগীদের রোগ নির্ণয়ে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। অপরদিকে হাসপাতালের সেবা ছাড়াও চমেকে পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের কোর্সের শিক্ষার্থীরা গত এক মাস ক্লাস পাচ্ছেন না। এই বিষয়টিতে অনেক ব্যবহারিক ক্লাসের প্রয়োজন হয়।

চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার আজাদীকে বলেন, পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগে গত মার্চে ডা. তানভীর আহাম্মেদ নামে একজন সহযোগী অধ্যাপক পদায়ন হয়েছেন। কিন্তু তিনি যোগ দেননি। এই বিষয়ে আমি গত এপ্রিলে চিঠি লিখেছি।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন আজাদীকে বলেন, পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছি। দ্রুত চিকিৎসক পদায়ন করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের পশুর হাটগুলোতে বেচাকেনা আজ থেকে
পরবর্তী নিবন্ধকালো টাকা সাদা করার সুযোগ বেনজীর পাবেন?