সরকারের সঙ্গে শর্তহীন সংলাপে বসতে রাজি নয় বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের পরিষ্কার কথা, আপনি (প্রধানমন্ত্রী) পদত্যাগ করুন, সংসদ বিলপ্ত করুন, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে তাদের অধীনে নির্বাচন হবে। সংলাপ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য আসার পরদিন গতকাল নয়াপল্টনে যুবদলের সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে এই সমাবেশে বিএনপির নেতাকর্মীরাও অংশ নেন। খবর বিডিনিউজের।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, আমরা তখনই কোনো আলোচনা করতে রাজি আছি, যখন বিএনপি সমস্ত শর্ত বাদ দিয়ে আলোচনায় আসবে। সবার আগে কিছু প্রশ্ন আওয়ামী লীগের কাছে। আপনারা যে কথা বলছেন, সরকারে যে বসে আছেন আপনারা কি সংবিধানভাবে বৈধ? এটা প্রমাণ করতে হবে আপনাকে। সংবিধান পরিবর্তন করে পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে এসেছেন সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে। অবৈধভাবে আপনারা ক্ষমতা দখল করে বসে আছেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা তুলে ধরে বিএনপি নেতা বলেন, বিচারপতি খায়রুল হক একটা ছোট রায় দিয়েছিলেন। তাতে তিনি বলেছিলেন যে, এটা (তত্ত্বাবধায়ক) প্রাসঙ্গিক নয়, (সংবিধানের সঙ্গে) সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তবে দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে আরও দুইটা নির্বাচন এই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে করা যেতে পারে। তাদের শর্ত ছিল বিচারককে (প্রধান উপদেষ্টা) করা যাবে না। সেই শর্ট রায় ১৬ মাস পরে পূর্ণাঙ্গ রায় হিসেবে বেরিয়েছিল। কিন্তু শর্ট ভার্ডিক্ট ও পূর্ণাঙ্গ ভার্ডিক্টে কোনো মিল ছিল না। পূর্ণাঙ্গ ভার্ডিক্ট দেওয়ার আগে সংসদে আওয়ামী লীগ জনগণের সঙ্গে সম্পূর্ণ প্রতারণা করে আইনটা পাস করেছিল। আজকে আপনারা বলছেন, সংবিধানের ভিত্তিতে হতে হবে। তাহলে সবার আগে আপনাকে (শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার) পদত্যাগ করতে হবে। কারণ, আপনারা অবৈধ।
কয়েকদিনের মধ্যেই সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন ঘোষণা হবে জানিয়ে নেতাকর্মীদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতেও বলেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, একটাই লক্ষ্য আমাদের এখন যে, সরকারের পতন ঘটাতে হবে। একটাই লক্ষ্য যে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে হবে এবং আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি বলেন, কথা একটাই, আমরা আমাদের জীবন দিয়ে লড়াই করছি, অনেক ভাই চলে গেছে, প্রাণ দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে। আমাদের অনেক মা–বোনের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে। আমাদের অনেক সন্তান পিতৃহারা হয়েছে, অনেক মা সন্তানহারা হয়েছে, আমাদের পেছনে ফিরে তাকানোর কোনো সময় নেই। তিনি বলেন, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকার, যারা আমাদের বুকের ওপর পাথরের মতো বসে আছে, তাকে পরাজিত করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ।