নগরীর পতেঙ্গার আব্দুল নবী হত্যা মামলায় আপন দুই ভাইয়ের ফাঁসির আদেশ ও সন্দ্বীপের মনিরুল আলম মেম্বার হত্যা মামলায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আমিরুল ইসলাম ও বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক একেএম মোজাম্মেল হক চৌধুরী শুনানি শেষে পৃথক এ দুটি রায় ঘোষণা করেন।
দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত সূত্র জানায়, পতেঙ্গার আবদুল নবী (২৬) হত্যা মামলায় বাদশা মিয়া (৫২) ও মহিউদ্দিন (৪১) নামের আপন দুই ভাইকে ফাঁসির আদেশের পাশাপাশি মামলার চার্জশিটভুক্ত আবদুল বারেক (৬১) ও হুমায়ুন কবিরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, সাইদুল হক (৪৭) ও খাইরুল আলমকে (৫৬) ৩ বছর করে কারাদণ্ড, ৫শ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাসের সাজা এবং জেসমিন আক্তার (৪২) ও লিপি আক্তারকে (৩৯) ৩ মাসের কারাদণ্ড, ৫০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০০৫ সালের ১৭ মে পতেঙ্গার কাঠগড় বাজার এলাকায় জমির মালিকানা বিরোধের জেরে আবদুল নবীকে চাইনিজ কুড়াল ও লোহার রড় দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আবদুল নবীর ছোট ভাই জাহিদুল আলম বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় একটি মামলা করেন। একই বছরের ৫ আগস্ট তদন্ত শেষে পুলিশ এজাহারভুক্ত ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে তদন্ত কর্মকর্তা। পরবর্তীতে ২০০৬ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন তৎকালীন ২য় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ কাউসার।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, সন্দ্বীপের মনিরুল আলম হত্যা মামলায় সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানসহ চার্জশিটভুক্ত ১১ জনকেই যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সন্দ্বীপের মগধরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান শাহীন, জামাল, আবদুর রহমান প্রকাশ রহমান হুজুর, আহসানুল্লাহ প্রকাশ মুনু, আবদুর রহমান, আলতাফ হোসেন, মেহরাজ, মান্নান, আশরাফ, ফারুক ও ফুল মিয়া। এদের মধ্যে আবদুর রহমান ও আশরাফ পলাতক। বাকিরা রায় ঘোষণার সময় আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৫ সালের ৩১ জুলাই সন্দ্বীপের মগধারা ইউনিয়নের ষোলশহর জেলে পাড়ায় রাজনৈতিক আধিপত্যকে কেন্দ্র করে মনিরুল আলম মেম্বারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রবিউল আলম ছমির নামের অপর এক ইউপি মেম্বার ২২ জনকে আসামি করে সন্দ্বীপ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরের বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। যেখানে ২০ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি আয়ুব খান ও দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি এম সিরাজ মোস্তফা মাহমুদ।