পণ্যমূল্য ঊর্ধ্বমুখী, নাকাল মধ্যবিত্ত

৭০-৮০ টাকার নিচে সবজি নেই বেড়েছে ডিম মাছ-মাংসের দাম

জাহেদুল কবির | বৃহস্পতিবার , ১৭ অক্টোবর, ২০২৪ at ৪:১৯ পূর্বাহ্ণ

নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী, নাকাল হয়ে পড়ছেন মধ্যবিত্ত শ্রেণী। আয়ের সাথে ব্যয়ের ব্যবধানে দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় সংসার চালাতে নাভিশ্বাস উঠেছে অধিকাংশের। খরচ কমাতে অনেকে পরিবারের সদস্যদের গ্রামে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। অন্যদিকে নিম্নবিত্ত শ্রেণীর কান্না দেখার যেন কেউ নেই। আলু ভর্তা, ডিমডাল খাবে। কিন্তু সেখানেও বেড়েছে খরচ। এক ডজন ডিম কিনতে হচ্ছে ১৭৫ টাকায়, মাঝারি মানের মশুর ডালের কেজি ১১০ টাকা এবং আলু বিক্রি হচ্ছে কেজি ৫৫ টাকায়। এছাড়া ঘর ভাড়া, ছেলে মেয়েদের পড়ালেখার খরচ এবং ওষুধ খরচ তো আছেই। নগরীর লালখান বাজার মোড়ে কথা হয় দিনমজুর আবুল হোসেনের সাথে। তিনি জানান, বউ বাচ্চাসহ ৮ জনের সংসার। এখন আয় কমে গেছে। এরমধ্যে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। নিজে একবেলা কম খেয়ে হলেও বাচ্চাদের খাওয়াতে হচ্ছে।

বেসরকারি চাকুরিজীবী আরিফুল ইসলাম বলেন, বেতন পাই ২০ হাজার টাকা। এরমধ্যে বাসা ভাড়া, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতেই অর্ধেক টাকা খরচ হয়ে যায়। বাকি টাকাতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিমাসে আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে ধার নিয়ে চলতে হচ্ছে। গতকাল নগরীর কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়, আদা ২৯০ টাকা এবং রসূন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। অপরদিকে বাজারে মানভেদে আতপ চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকা থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া বিভিন্ন ক্যাটাগরির সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা থেকে ৮৫ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া বাজারে বর্তমানে ৭০৮০ টাকা নিচে কোনো সবজি নেই। ২০০ টাকা নিচে মাছ নেই এবং ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকায়।

বেসরকারি স্কুল শিক্ষক আনিসুল ইসলাম বলেন, স্কুল থেকে যে বেতন পাই এতে সংসার চলে না। তাই বাধ্য হয়ে টিউশন করতে হয়। তারপরেও যে আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বাজারে চাল, ডাল, তেলচিনি থেকে শুরু করে এমন কোনো পণ্য নেই যে দাম বাড়েনি।

ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম তেমন বাড়েনি। তবে আমাদের দেশে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানির খরচ বেড়ে গেছে। কোনো ব্যবসায়ী তো আর লোকসান দিয়ে ব্যবসা করবে না। অপরদিকে খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিমতপাইকারদের থেকে একটা নির্দিষ্ট মুনাফায় খুচরা ব্যবসায়ীরা পণ্য বিক্রি করে। বর্তমানে দোকান ভাড়া, গ্যাসবিদ্যুৎ খরচ বেড়েছে। অতি মুনাফা করার সুযোগ নেই।

ইসমাইল হোসেন নামের এক ভোক্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাজারে এমন কোনো পণ্য নেই দাম বাড়েনি। এতে সবচেয়ে বেশি বিপদে আছে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত শ্রেণী। যেভাবে খরচ বাড়ছে, সেভাবে কারো আয় বাড়েনি। তাই সীমিত আয় দিয়ে সংসার চালানোটা দুরূহ হয়ে পড়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঈদে ৫ দিন, পূজার ছুটি ৩ দিন হতে পারে
পরবর্তী নিবন্ধওয়ান ব্যাংকের পরিচালক সাঈদ ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা