পটিয়া পৌর সদরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নুর আফসা নামের তিন মাসের এক শিশু ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। এ ঘটনায় শিশুটির স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছেন। পৌর সদরের শেভরন হাসপাতালে গতকাল শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। নুর আফসা উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের সাকিব আল হাসানের মেয়ে।
পিতা সাকিব আল হাসান জানান, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে শুক্রবার সকালে মেয়েকে পটিয়ার শেভরন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর চিকিৎসক তাকে একটি ইনজেকশন পুশ করেন এবং এর একটু পর সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। মেয়ের শেষ সময়ে চিকিৎসক ও সেবিকাকে খুঁজতে গেলে হাসপাতালে কাউকে পাওয়া যায়নি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শিশুটির মৃত্যুর পর হাসপাতালে ভাংচুর চালায় রোগীর স্বজনরা। তারা হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষের গ্লাস, জানালা ও চেয়ার–টেবিল ভাংচুর করে। পরে পটিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ ওসমান জানান, নিউমোনিয়া রোগ নিয়ে ৩ মাস ২০ দিন বয়সী এ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। তার পিতা–মাতাকে বলা হয়েছিল চিকিৎসা চলাকালীন মুখে কোনো খাবার না দিতে। কিন্তু বাচ্চা কান্না করাতে এবং পাশের বেডের মহিলাদের কথায় তাকে বুকের দুধ পান করানোর পর তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক অনেক চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারেননি।
শেভরন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদ হাসান বলেন, বাচ্চাটা ডা. দেলোয়ার সাহেবের রোগী। নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীকে কোনো খাওয়ার দেওয়ার নিয়ম নাই। রোগীর মা চিকিৎসা চলাকালে বাচ্চাটিকে বুকের দুধ খাওয়ালে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এতে চিকিৎসক ইনজেকশন পুশ করে। পরে বাচ্চাটি মারা যায়। তিনি শিশু মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, রোগীর স্বজনদের অভিযোগ তদন্ত করা হবে। তদন্তে কারও গাফিলতির প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পটিয়া থানার ওসি নাজমুন নুর বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।